চাটমোহর সরকারি কলেজশিক্ষক কক্ষ তালাবদ্ধ,অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান - দৈনিকশিক্ষা

চাটমোহর সরকারি কলেজশিক্ষক কক্ষ তালাবদ্ধ,অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি |

পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের শিক্ষক কক্ষ তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা কলেজে গিয়ে দেখেন শিক্ষক কক্ষটি তালাবদ্ধ। বিষয়টি তাৎক্ষনিক উপাধ্যক্ষ মোঃ আঃ মজিদের নজরে আনেন শিক্ষকরা। এসময় উপাধ্যক্ষ অধ্যক্ষকে অবহিত করেন। এরপর শিক্ষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যদের বিষয়টি অবগত করেন। পরে সকাল ১১টার দিকে তালা খুলে দেওয়া হয়। অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান অবশ্য তালা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও উপাধ্যক্ষ আঃ মজিদ তালা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। আন্দোলনরত শিক্ষক মোস্তফা কামাল, বিকাশ মৈত্র, ওয়াইজ আলম স্ট্যালিন,ড,মুক্তি মাহমুদসহ অন্যরা জানান,সকাল সোয়া ৮টায় কলেজের ক্লাস শুরু। কলেজে এসে দেখা গেল অন্যান্য রুম খোলা থাকলেও শিক্ষকদের রুম বন্ধ। বিষয়টি তাৎক্ষনিক ইউএনও,উপাধ্যক্ষ ও থানার ওসিকে বলা হয়। পরে শিক্ষকরা অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে অবস্থান করেন। পরে সকাল ১১টার দিকে কক্ষ খুলে দেওয়া হলেও শিক্ষকরা সেখানে আর যাননি। শিক্ষকরা আরো অভিযোগ করেন,আমাদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হচ্ছে না। অধ্যক্ষ তার কাছে হাজিরা খাতা আটকে রেখেছেন। আমরা বিকল্প হিসেবে একটি খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করে ক্লাস করছি।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন,‘আমি কোন খাতা আটকে রাখিনি। তারাই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছে না। তারা অনুপস্থিত আছেন। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অধ্যক্ষ বলেন, ইউএনও-এর সমর্থনকারী শিক্ষকরা এই মিথ্যে অভিযোগ ও অপপ্রচার করছেন। কোন কক্ষই তালাবদ্ধ রাখা হয়নি। তিনি বলেন,ইউএনও’র কারণেই কলেজের পদ সৃজন ও আত্তীকরণের কাজ বন্ধ রয়েছে। কতিপয় শিক্ষককে দিয়ে তিনি আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন। এরই অংশ হিসেবে তালা দেওয়ার মিথ্যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।  অধ্যক্ষ বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। ইউএনও’র কারণেই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার বলেন,শিক্ষক কক্ষে তালা দেওয়ার বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি এএসপি (সার্কেল) কে জানিয়েছি। তাছাড়া হাজিরা খাতা আটকে রেখে শিক্ষকদের স্বাক্ষর করতে না দেওয়ার বিষয়টিও আমাকে জানানো হয়েছে। অধ্যক্ষ কোন কাজেই আমাকে সহযোগিতা করছেন না। তিনি বলেন,‘ইতোপূর্বে প্রাথমিক তদন্তে অধ্যক্ষের দূর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে। তার অসহযোগিতার কারণেই শিক্ষকদের আত্তীকরণের ফাইল পাঠানো যায়নি।”

প্রসঙ্গতঃ অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা দূর্নীতি ও অনিয়ম,শিক্ষকদের পদ সৃষ্টি ও প্রত্যায়নপত্রে মিথ্যে তথ্য প্রদান,প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এবং অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে টানা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছেন শিক্ষকরা। অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম,দূর্নীতি,স্বজনপ্রীতি ও ভুয়া নিয়োগের প্রতিবাদে ও তার অপসারণ দাবিতে লিফলেট বিতরণ,পোস্টারিং,মানববন্ধন,অবস্থান কর্মসূচী,ক্লাস বর্জন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী। 

নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। শিক্ষক নিয়োগসহ কলেজের বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন খোদ তার সহকর্মীরা। এনিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে কলেজ জাতীয়করণ হলেও শিক্ষকদের পদ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। স্থানীয় প্রশাসনও বলেছে,অধ্যক্ষের দূর্নীতির প্রমাণ মিলেছে তদন্তে। কলেজের ৫২ জন শিক্ষক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেছেন। পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটিও দূর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করেছেন। শিক্ষক আত্তীকরণের ফাইল নির্ধারিত সময়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়নি। বর্তমান ফাইলগুলো চাটমোহর থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার। কলেজের অধ্যক্ষ চাটমোহর থানায় জিডি করা ছাড়াও হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা নিরাপত্তার জন্য চাটমোহর থানায় জিডি করেছেন। কলেজের শিক্ষকরা জানান,অধ্যক্ষ ২২ জন শিক্ষককে ভুয়া নিয়োগ দিয়েছেন। বিভিন্ন দূর্নীতি করেছেন। অধ্যক্ষ হিসেবে তার যোগ্যতারও ঘাটতি রয়েছে। ফলে অধ্যক্ষ কলেজ জাতীয়করণে বাধ সেধেছেন। 

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036721229553223