চিকিৎসা শিক্ষায় ৬০ ভাগই নারী, গুরুত্বপূর্ণ পদ অর্জনেও সফলতা - দৈনিকশিক্ষা

চিকিৎসা শিক্ষায় ৬০ ভাগই নারী, গুরুত্বপূর্ণ পদ অর্জনেও সফলতা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নারীদের চিকিৎসা শিক্ষা অর্জনে সমান সুযোগ রয়েছে। কর্মসংস্থানে পাচ্ছেন অংশগ্রহণের সমান সুযোগ। এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ের চিকিৎসা শিক্ষায় ৬০ ভাগই নারীদের দখলে। 

এমনকি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে নারীদের অবস্থান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, নারী চিকিৎসকরা পুরুষ চিকিৎসকদের তুলনায় উচ্চমানের সেবা দিতে সক্ষম।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে দেশের মেডিকেল কলেজগুলোয় ১০ হাজার ২২৩ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। যার প্রায় ৬০ শতাংশ ছাত্রী। ঢাকা মেডিকেল কলেজে গত শিক্ষাবর্ষে ২২০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়, যার মধ্যে ১৩৬ জন ছাত্রী এবং ৮৪ জন ছাত্র। গত ১০ বছরের চিত্র হল- পুরুষের তুলনায় এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনকারী নারীর সংখ্যা ৩ হাজারের বেশি।

বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উপজেলা পর্যায় থেকে বিশেষায়িত হাসপাতাল, মেডিকেল অফিসার থেকে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পর্যায়ে নারী চিকিৎসকরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন। বর্তমান স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের দুইজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকই নারী। 
গুরুত্বপূর্ণ পরিচালকের পদেও রয়েছেন কয়েকজন নারী চিকিৎসক। এমনকি দেশের চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কন্ট্রোল রুমের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও সামাল দিচ্ছেন তারা। দেশের একমাত্র চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসির পদেও রয়েছেন একজন নারী চিকিৎসক।

তথ্যানুযায়ী, ২০০৭ থেকে ২০১৬  খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও এমবিবিএস পাশের হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, মেডিকেলে এখন ছাত্রী ভর্তি বেশি হচ্ছে। আবার ছাত্রীরা পাসও করছেন বেশি। এমবিবিএস পরীক্ষা পাসের ক্ষেত্রে ছাত্রীরা শুধু সংখ্যায় বেশি তা-ই নয়, শীর্ষ স্থানগুলোও তারা দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা শীর্ষ ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ জনই ঢাকা মেডিকেল কলেজের। এই ৮ জনের মধ্যে ৭ জনই ছাত্রী। সংশ্লিষ্টদের মতে, ছাত্রীদের এই অগ্রযাত্রা বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে।

সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবার ক্ষেত্রে নারীদের সংখ্যা পুরুষকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ১১১টি। তার মধ্যে সরকারি ৩৬টি, বেসরকারি ৬৯টি, আর্মি মেডিকেল কলেজ ৫টি, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ১টি। 

শুধু নারীদের মেডিকেল শিক্ষার জন্য ৫টি মেডিকেল কলেজ। এগুলো হল- জেডএইচ শিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, উত্তরা উইমেন মেডিকেল কলেজ, কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ, সিলেট উইমেন মেডিকেল কলেজ ও আদ-দ্বীন উইমেন মেডিকেল কলেজ।

সূত্রমতে, ২০০৭  খ্রিষ্টাব্দ থেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রীদের সংখ্যা ছাত্রদের তুলনায় বাড়ছে। ওই সময় শিক্ষাবর্ষে ছাত্রী ও ছাত্রের হার ছিল ৫১ ও ৪৯ শতাংশ। বিগত শিক্ষাবর্ষে তা দাঁড়ায় ৬০ ও ৪০ শতাংশে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে দেখা যায়, গত দশ বছরে (২০০৭-২০১৭) মেডিকেল কলেজগুলো থেকে ৩৯ হাজার ২৮৫ জন বাংলাদেশি এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাদের মধ্যে ২১ হাজার ১২৩ জন ছাত্রী এবং ১৮ হাজার ১৬২ জন ছাত্র। অর্থাৎ পুরুষের চেয়ে ২ হাজার ৯৬১ জন নারী চিকিৎসক হিসেবে ডিগ্রি নিয়েছেন। 

পরিসংখ্যান বলছে, আগামী বছরগুলোয় এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৭  খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ পুরুষ চিকিৎসকের দ্বিগুণ নারী চিকিৎসক পাস করে বের হবেন। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা চিকিৎসা শিক্ষায় ভালো করছে। অধিকতর মেধাবী হওয়ায় প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষায় অংশ নিয়েই তারা নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছে। একটা সময় নারী চিকিৎসকরা শুধু প্রসূতিবিদ্যায় উচ্চশিক্ষা নিত। এখন তারা মেডিসিন, সার্জারি এমনকি বেসিক সায়েন্সে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে কর্মদক্ষতা প্রমাণ করছে’। 

অধ্যাপক কামরুল নারী চিকিৎসকদের জন্য কর্মোপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নারীদের প্রয়োজন অনুসারে কর্মক্ষেত্রে স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি করা প্রয়োজন।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003568172454834