ছাত্র নেতৃত্ব বিলাসিতা বা উপভোগের বিষয় না : শিক্ষা উপমন্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

ছাত্র নেতৃত্ব বিলাসিতা বা উপভোগের বিষয় না : শিক্ষা উপমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নেতৃত্ব পাবার পর ভোগবিলাসের মানসিকতা পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ছাত্র হিসেবে নেতৃত্ব পরপরই আমাদের জন্য যেন এমন মানসিকতা সৃষ্টি না হয়; যে আমি নেতা হয়েছি আমাকে গাড়িতে চড়তে হবে, আমার জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করতে হবে। কিন্তু তারা নেতা হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও কর্মীদের স্বার্থে কথা বলার জন্য। নেতৃত্ব মানেই হচ্ছে দায়িত্ব। নেতৃত্ব উপভোগের বিষয় না।’

বুধবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলোচিত পরিবেশ বান্ধর রাইড শেয়ারিং সার্ভিস ‘জোবাইক চক্করের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী।

মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, আজকে আমি নেতা হয়ে যদি ক্ষমতার প্রভাব ব্যবহার যদি অনৈতিকভাবে ব্যক্তি স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে বিলাসী জীবন যাপন করি, তাহলে আমি সঠিক রাজনীতি করছি না। আমি যাদের প্রতিনিধিত্ব করছি তাদের জীবন যাপনের মানের থেকে যদি আমার জীবন যাপনের মান অস্বাভাবিক ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়, তাহলে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবার নৈতিক অধিকার আমার থাকে না। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে, পদ দেয়া হয়েছে, কাজ করবার জন্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এখানে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বার্ষিক একটি বরাদ্দ দেয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দের টাকা কাজে লাগিয়ে যার যার অবস্থান থেকে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারি সে বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। ক্যম্পাসে পরিবেশ সচেতনতা থেকে শুরু করে, ক্যম্পাসে পরিচ্ছন্নতা নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা যে পরিমাণ অর্থ দেয়া হয়, তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছাত্র নেতাদের। প্রশাসনিক খরচের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা আনতে গেলে অবশ্যই ছাত্র নেতাদের অর্থের সঠিক ব্যবহারের বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। আর সেটাই সত্তিকারের রাজনীতি।

শিক্ষা উপমন্ত্রী আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করতে শিক্ষার্থীদের প্রায় ১০ লাখ রুপি টিউশন ফি দিতে হয়। সেখানকার একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করতে তাদের ৩২ লাখ রুপি টিউশন ফি দিতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশের রাষ্ট্র সহযোগিতা করে আমার সন্তানকে ইঞ্জিনিয়ার হতে বরাদ্দ দিচ্ছে। তাই আমরা উচ্চশিক্ষা অর্জনে কত টাকা দেই সেটা আমাদের ভাবতে হবে।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করতে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে সমন্বিত উন্নয়ন করতে পারলে ক্যম্পাসে সুযোগ-সুবিধা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। আমরা বিশ্বাস করি রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ আরও বাড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং নিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, র‌্যাংকিং নিয়ে একটা আলোচনা প্রায়ই আসে। একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে, অনেক টাকা বরাদ্দ দিলেও আমরা র‌্যাংকিংয়ে আসি না কেন। আমি তাদের উত্তর দিয়েছিলাম আমাদের উচ্চ শিক্ষার নীতি দর্শন ভিন্ন। আমাদের উচ্চশিক্ষার দর্শন বাণিজ্যিক নয়। তাই কোন দেশের গণমাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ের কি র‌্যাংকিং করলো, সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমার দেখার বিষয় আমার সন্তান উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে কিনা। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে উচ্চশিক্ষার যে ব্যয় তার থেকে অনেক কম খরচে 
সরকার বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে পেরেছ।

মহিবুল হাসারন চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে জ্ঞান তৈরি হচ্ছে তা আমার অর্থনৈতিক কাজে আসছে বলেই প্রবৃদ্ধি আজকে ৮ শতাংশ অতিক্রম করেছে। না হলে সেটা সম্ভব হতো না। এর মানে উচ্চশিক্ষায় আমাদের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসময় শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও প্রশাসন পরিচালনার সাথে জড়িতদের সমন্বিতভাবে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে ছাত্র নেতাদের আহ্বান জানান শিক্ষা উপমন্ত্রী।

জোবাইক চালু করায় ডাকসু কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আপনারা খুবই চমৎকার একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। আমাদের সন্তানরা ছাত্রজীবন থেকেই পরিবেশসম্মতভাবে নিজেদের পরিবহনের ব্যবস্থা করতে পারবে। সে সুবিধা দিতেই এ সার্ভিসটি চালু হয়েছে। আমরা আশা করি আমাদের সন্তানদের মধ্যে এর মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতা আসবে।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033280849456787