ছাত্র রাজনীতির সুদিন আসবে কবে? - দৈনিকশিক্ষা

ছাত্র রাজনীতির সুদিন আসবে কবে?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ১৯৯১ সালে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় জনগণ তাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোট সরকার গঠন করবে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, স্বাভাবিকভাবেই এ শাসনব্যবস্থায় রাজনীতির মূল্যবোধ শিক্ষাজীবন থেকেই থাকা উচিত। কারণ শিক্ষাজীবন বীজ বপনের উৎকৃষ্ট সময়। এ সময় যে যেমন বীজ বপন করবে, সে তেমন ফল পরবর্তীকালে পাবে।

গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় কাউকে সুশিক্ষিত, সৎ ও যোগ্য সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে হলে তাকে তৃণমূল থেকেই আসতে হয়।

ছাত্রজীবন শেখার সময়। এ সময়ে যদি কোনো ব্যক্তি রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করে, তাহলে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আরও সুদৃঢ় হয়। রাজনীতির সঠিক পথ সে অনুসরণ করতে পারে। বর্তমানের অনেক যোগ্য নেতা বা মন্ত্রী ছাত্রজীবনে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

ছাত্র রাজনীতির বর্তমান অবস্থা দেখে মনের কষ্টে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছিলাম, ‘ছাত্র রাজনীতি কি নিষিদ্ধই শ্রেয়?’ কিন্তু আমি তো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ কখনই কাম্য নয়। যদি তাই হতো তবে অনেক শিক্ষাই আমরা পরে শিখতে পারতাম। আমরা বাড়িতে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকি, তথাপি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাই। কারণ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাদের প্রয়োজন।

তবে ছাত্র রাজনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমি শঙ্কিত। এর জন্য কারা দায়ী? এ প্রশ্নও বারবার জাগে। যে কোনো ধারাকে সুস্থ ধারায় নিয়ে যাওয়া সবার দায়িত্ব। ছাত্রলীগ যদি অন্যায় করে, ছাত্রদলের উচিত এর সমুচিত সমালোচনা করে জনগণকে সম্পৃক্ত করে ভালো পথে যেতে বাধ্য করা। অনুরূপভাবে সব সংগঠনেরই একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত। কারণ শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র সমৃদ্ধ হয় না।

কিন্তু আমরা কি দেশে তেমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেখতে পাই? ছাত্র রাজনীতির কর্ণধাররা কি বলেছেন- হত্যা, খুন, টেন্ডারবাজি ছাত্রসংগঠনের প্রধান কাজ? কোথাও কি লেখা আছে, কোনো সংগঠন অনিয়ম করলে তার সমাধান করা যাবে না? সেটাকে ইস্যু করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে হবে? একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে মনে করি, রাজনীতি করতে হবে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে। রাজনীতি করতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠের অধিকার নিয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার মান আশানুরূপ নয়, সেক্ষেত্রেও ছাত্র রাজনীতি দরকার। অনেক শিক্ষক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিচ্ছেন, এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করা যেতে পারে। কিন্তু দল না করলে খুন, চাঁদা না দিলে রাতের আঁধারে হামলা- এগুলো তো রাজনৈতিক সংস্কৃতি নয়।

ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। আমরা যদি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের দিকে তাকাই, দেখি ছাত্ররাই আওয়াজ তুলেছিল ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। সেই বীজ এখনও ছাত্র রাজনীতির জন্য দিকনির্দেশনা। পরবর্তী সব আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। আজ যাকে আমরা বঙ্গবন্ধু নামে সম্বোধন করি, তিনিও ছাত্র রাজনীতি থেকেই বঙ্গবন্ধু হয়েছেন। তাকে সেই উপাধিও ছাত্ররাই দিয়েছে। ছাত্র রাজনীতির সেই আলোকিত ও স্বর্ণযুগের অভাব আমি ভীষণভাবে অনুভব করি। তাই প্রশ্ন- ছাত্র রাজনীতির সুদিন আসবে কবে?

ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন আছে। তবে তা নিরীহ মায়ের বুক খালি করার জন্য নয়। রাজনীতি করে ক্লাস বন্ধ করে পড়ালেখার ক্ষতি করার জন্য নয়। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী রাজনীতি করে না। তাহলে কেন রাজনীতির জন্য নিরীহ শিক্ষার্থীরা সংকটে পড়বে?

কেন ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তানকে ভর্তি করতে বাবা-মাকে ভাবতে হবে? ছাত্র রাজনীতিকে সুস্থধারায় নেয়ার দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলের বা নেতার। সুস্থধারার রাজনীতি না করায় রাজনীতি থেকে বিলীন হয়ে যাওয়া নেতার সংখ্যা কম নয়।

তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতিতে দলীয় প্রধানদের আরও কঠোর পদক্ষেপ আশা করি। আশা করি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের গঠনমূলক ও দেশের জন্য রাজনীতি। কারণ কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির জন্য রাজনীতি করা উচিত নয়।

গোপাল অধিকারী : মানবাধিকার কর্মী

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003464937210083