ছাত্রত্ব বাতিল হচ্ছে অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলা শিক্ষার্থীদের - দৈনিকশিক্ষা

ছাত্রত্ব বাতিল হচ্ছে অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলা শিক্ষার্থীদের

রাজশাহী প্রতিনিধি |

অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ ১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক পরিষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ৪ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, ৫ শিক্ষার্থীর মূল সদনপত্র আগামি তিন বছর আটকে রাখা এবং ৭ শিক্ষার্থীকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দিয়ে অন্য কোনো ইন্সটিটিউটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অপরাধী চিহ্নিত হওয়া এসব ছাত্ররা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এরই মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য কারিগরি শিক্ষাবোর্ডসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাজশাহী পলিটেকনিকে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ।

তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডকে পাঠিয়েছেন। এখন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন কী করবেন। তারা চাইলে এই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। আবার তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যানও করতে পারেন।

মিডটার্মে ফেল এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা দুই শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে না দেয়ায় অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিনকে চাপ দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে গত ২ নভেম্বর কার্যালয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার পর টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে মামলা করেন অধ্যক্ষ। এতে সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেয়ার ঘটনায় ওই সময় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাম প্রশাসনিক পরিষদের সভায় তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই কমিটির দেয়া প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ওই সভায় দোষি সাব্যস্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভায় যাদের ছাত্রত্ব বাতিল বা রেজিস্ট্রেশন বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলার মূলহোতা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ২০১৫-১৬ সেশনের কম্পিউটার বিভাগের ৮ম পর্বের শিক্ষার্থী কামাল হোসেন ওরফে সৌরভ, একই সেশনের ইলেকট্রো মেডিক্যাল বিভাগের ৭ম পর্বের শিক্ষার্থী রায়হানুল ইসলাম, ২০১৭-২০১৮ সেশনের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ৫ম পর্বের ছাত্র মুরাদ হোসেন ও ২০১৮-২০১৯ সেশনের মেকানিক্যাল বিভাগের ৩য় পর্বের শিক্ষার্থী সাজিব হোসেন।

সরাসরি ঘটানার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা ৫ শিক্ষার্থীর মূল সনদপত্রসহ অনান্য কাগজপত্র আগামি তিন বছরের জন্য আটকে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এরা হলেন, ২০১৫-২০১৬ সেশনের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের কৌশিক জামান ওরফে বনি, ইলেকট্রো-মেডিক্যাল বিভাগের সালমান রহমান ওরফে টনি, পাওয়ার বিভাগের সাব্বির অহম্মেদ, মেকাট্রনিক্স বিভাগের হাসিবুল হাসান ও কম্পিউটার বিভাগের মারুফ হোসেন।

এছাড়াও পরোক্ষভাবে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে ৭ শিক্ষার্থীকে অন্যত্র বদলি করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এরা হলেন, ২০১৫-২০১৬ সেশনের পাওয়ার বিভাগের ৬ষ্ঠ পর্বের (অকৃতকার্য) নাঈম ইসলাম, ২০১৬-২০১৭ সেশনের ইলেকট্রনিক্স ৭ম পর্বের প্লাবন কুমার কুন্ডু , মেকাট্রনিক্স ৭ম পর্বের  মেহেদী মাহমুদ, মেকানিক্যাল বিভাগের ৭ম পর্বের মেহেদি হাসান, ২০১৭-১৮ সেশনের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ৫ম পর্বের ওমর আজিজ, ২০১৮-২০১৯ সেশনের ৩য় পর্বের কম্পিউটার বিভাগের মাহবুবুর রহমান ও পাওয়ার ৩য় পর্বের মাসুদ রানা মীম।

তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি চলমান রেখে সুষ্ঠুভাবে একাডেমিক কার্যক্রম চালানো অসম্ভব। একারণে আগামি ৫ বছর এখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া ছাত্রলীগের টর্চারসেল হিসেবে পরিচিত ১১১৯ নম্বর কক্ষটি ভেঙে ছাত্র কমনরুম বৃদ্ধিরও সুপারিশ করা হয়েছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, মামলাটি প্রথমে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ তদন্ত করছিলো। পরে সেটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুব হাসান জানান, ঘটনার মূলহোতা সৌরভসহ এজাহারভুক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার হয়েছে। এছাড়া, এজাহারের বাইরে থাকা আরো ১৩ জন গ্রেফতার রয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে। একইসাথে অন্য অপরাধিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040578842163086