নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। দীর্ঘ ২৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া কাউন্সিলে সভাপতি পদে নয়জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১৮৬ ভোট পেয়ে ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফজলুর রহমান খোকন এবং ১৩৯ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ইকবাল হোসেন শ্যামল। সভাপতির বয়স ৩৫ বছর এবং সম্পাদকের ৩১ বছর।
ফজলুর রহমান খোকন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সহ-প্রচার সম্পাদক আমীরুজ্জামান আলীম, ‘হাওয়া ভবন’ খ্যাত রুম্মন হোসেন, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এমপি সহ উত্তরাঞ্চল ‘সিন্ডিকেটের’ প্রার্থী এবং সাধারণ সম্পাদক শ্যামলের সদ্যবিলুপ্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টুর প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি রয়েছে।
ছাত্রদলের শীর্ষ এ দুই নেতার জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরা হলো-
ফজলুর রহমান খোকন
মো. খালেকুজ্জামান ও ফরিদা ইয়াসমিন দম্পতির সন্তান খোকন ১৯৮৪ সালের ১০ জুন জন্মগ্রহণ করেন। ১০২/এ, লালবাগ ঢাকায় বর্তমানে বসবাস। তার পৈতৃক নিবাস বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পারভবানীপুর গ্রামে। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে ২০০০ সালে এসএসসি, শেরপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০০২ সালে এইচএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স এবং ২০১০ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে জাপানিজ স্ট্যাডিজে অধ্যায়নরত।
২০০৩-০৪ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে রাজনীতিতে পদার্পণ তার। ২০০৫ সালের ছাত্রদলের এই হল শাখা কমিটির সহ-দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এ ছাড়া সদ্যবিলুপ্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটর সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত খোকন রাজনৈতিক কারণে ২৩টি মামলার শিকার হয়েছেন। চারবার তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে।
ইকবাল হোসেন শ্যামল
১৯৮৮ সালের ১৫ এপ্রিল নরসিংদীর রায়পুরা এলাকায় শ্যামল জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত মো. গিয়াস উদ্দিন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হিসেবে নরসিংদীর রায়পুরায় কর্মরত ছিলেন। শ্যামলের মা দেলোয়ারা বেগম রায়পুরা ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত শ্যামল একটি অরাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠেন। রায়পুরা আরকেআরএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি; নটর ডেম কলেজ, ঢাকা থেকে ২০০৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে ২০০৯ সালে অনার্স এবং ২০১০ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনায় অধ্যয়নরত।
২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে মুজিব হল শাখা ছাত্রদলের মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন শ্যামল। ঢাবির ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। রাজনৈতিক কারণে শ্যামল ইতোমধ্যে দুটি মামলার শিকার হয়েছেন। ২০১৩ সালের ২৮ মে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।