নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবিতে পথে নেমে গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদের ‘নিঃশর্ত’ মুক্তি দিতে সরকারপ্রধানের প্রতি ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় পার্টির পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মাতৃজ্ঞানে’ শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিয়ে ‘মহানুভবতা’ দেখাবেন বলে আশা করছেন এরশাদ।
তবে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে যারা ‘ভিন্ন খাতে’ প্রবাহিত করতে চেয়েছে- তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করেছেন তিনি।
বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মায়ের সমান। তিনিও যথার্থ উপলব্ধি করে বলেছেন, আমাদের সন্তানরা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। তিনি মাতৃজ্ঞানে কোনো কালবিলম্ব না করে ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়েছেন। তার এই মহানুভবতাকে সম্মান দেখিয়ে হলেও গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদের মুক্তি দেওয়া উচিৎ।”
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসা শিক্ষার্থীরা ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এসব ঘটনায় বহু শিক্ষার্থীকে আটক করে মামলা দেয় পুলিশ।
এর মধ্যে ঢাকায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জনকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদও করে। বিভিন্ন সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এই শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হলেও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।
সরকারের সঙ্গে এক বৈঠকে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের জন্য সাধারণ ক্ষমার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তাদের ‘না’ বলে দেন।
বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, “এদেশের সর্বস্তরের মানুষ এবং দলমত নির্বিশেষে যে ছাত্রদের অভিনন্দন জানিয়েছে- এখন তাদের মধ্যে আর কাউকে গ্রেফতার করে রাখা ঠিক হবে না।”
শিক্ষার্থীদের ওই আন্দোলনকে ‘সফল এবং যৌক্তিক’ হিসেবে বর্ণনা করে এরশাদ বলেন, “আন্দোলনের মধ্যে কোথাও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতেই পারে। তার মধ্যে কোনো কোনো আন্দোলনকারী ছাত্র অবুঝের মতো হয়ত নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে। কিন্তু যখন তাদের ঘরে এবং ক্লাসে ফিরে যাবার জন্য বলা হয়েছে- তখন তারা রাস্তা থেকে ফিরেও গেছে। আমি নিজেও বিবৃতি দিয়ে ছাত্রদের ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছি।
“এখানে কেউ যদি কোনো ভুল করে থাকে, প্রধানমন্ত্রী যেন তাদের মাতৃজ্ঞানে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।”