ছাত্রদের হুমকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় - দৈনিকশিক্ষা

পিরোজপুর বালক উচ্চ বিদ্যালয়ছাত্রদের হুমকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

হত্যা ও গুমের ভয় দেখিয়ে সপ্তম শ্রেণির সাত থেকে আটজন ছাত্র মিলে চতুর্থ শ্রেণিসহ অন্যান্য শ্রেণির ১৫ জন ছাত্রের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনা ঘটেছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় ১০ জন অভিভাবক ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের সূত্র ধরে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির দিবা শাখার ছাত্র মোহাম্মদ তামিম, দিগন্ত মৃধা ও তানভীর আহমেদ হৃদয়কে গ্রেপ্তার করেছে।

কয়েকজন অভিভাবক জানান, দুই মাস ধরে সপ্তম শ্রেণির দিবা শাখার ছাত্র তামিমের নেতৃত্বে হৃদয়, দিগন্ত, তানভীর, সাইফসহ সাত-আটজনের একটি চক্র এ অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটাচ্ছে। হত্যা ও গুমের হুমকি, দৈহিক নির্যাতন ও ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে শিশুদের কাছ থেকে তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এই টাকার বড় একটি অংশ যাচ্ছে একই বিদ্যালয়ের সাবেক কয়েকজন ছাত্রের হাতে। অভিভাবকদের মধ্যে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মাহিম মল্লিকের মা সালমা আক্তার জানান, তাঁর স্বামী মামুন মল্লিক সৌদি প্রবাসী। তাঁর ছেলের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছে ওই চক্রটি। চাপের মুখে টাকা ও রিয়াল নিয়ে ওই চক্রের হাতে তুলে দেওয়ার একপর্যায়ে অন্য ছাত্র ও অভিভাবকদের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ পায়। তখন ছেলেকে সালমা আক্তার চাপ দিলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারেন তিনি। জানা যায়, ওই চক্রের নেতা তামিম শহরের রাজারহাটে বসবাসরত আরেক প্রবাসী শহীদুল ইসলাম সিকদারের ছেলে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বুধবার এ প্রতিবেদক হাজির হন ওই বিদ্যালয়ে। সেখানে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে ১৫-১৬ জন শিক্ষার্থী জানায়, নানাভাবে হয়রানি ও ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। বিষয়টি কাউকে জানালে তাদের বস্তায় ভরে গুম করে ফেলা হবে বলেও হুমকি দিত ওই চক্রটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্ররা তাদের বাইসাইকেলের ভাঙা অংশ নিয়ে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্কুলের ব্যাগের ভেতর দিয়ে তাদের চোর বলে ব্ল্যাকমেইল করত। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা বাথরুমে গেলে কৌশলে অভিযুক্তরা তাদের ছবি বা ভিডিও ধারণ করত এবং পরে সেগুলো প্রকাশের হুমকি দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হতো। সদ্য সমাপ্ত বৈশাখী মেলায় ওই অভিযুক্তরাসহ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী একটি খাবারের স্টল দিয়েছিল। মেলায় চতুর্থ শ্রেণি, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রদের দেখা গেলেই তাদের স্টলে নিয়ে সেভেন আপ বা কোকা-কোলার মুখ খুলে তাদের কাছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা দাবি করা হতো। আর কেউ খেতে না চাইলে বলা হতো বোতলের মুখ আটকে দে, না হয় টাকা দিতে হবে। সেই সময় টাকা না দিতে পারলে তার নাম ও রোল নম্বর লিখে রাখত ওই চক্রটি। পরে বিদ্যালয়ে তাদের কাছ থেকে সেই টাকা আদায় করত।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গৌরঙ্গ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিভাবকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।’

এ ব্যাপারে পিরোজপুর সদর থানার ওসি এস এম জিয়াউল হক বলেন, ‘বিষয়গুলো দেখে হতবাক হয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060288906097412