ছাত্রলীগ নেতাদের ফরম পূরণের টাকা দিয়েও টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। অভিযোগ পাওয়া গেছে, মাগুরা আদর্শ কলেজের দুই ছাত্রলীগ নেতা টাকা নিয়ে ফরম পূরণ না করে দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর কলেজটির ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ।
সোমবার (১ এপ্রিল) শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় ওই কলেজ থেকে মোট ৩৩৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তবে টেস্ট পরীক্ষায় পাস না করায় আরও শতাধিক নিয়মিত শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে পারেনি।
জানা গেছে, পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেওয়া হয় গতকাল রোববার। অন্যদের সঙ্গে প্রবেশপত্র নিতে এসেছিল টেস্টে অকৃতকার্য অধশতাথিক শিক্ষার্থীও। কিন্তু টেস্টে অকৃতকার্যরা প্রবেশপত্র পায়নি। এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে, আমাদের দুই বন্ধুর কাছ থেকে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হুদা ১৬ হাজার ৬০০ টাকা নিয়েছে। কথা ছিল ফরম পূরণ করে দেবেন তারা। তবে আমাদের প্রবেশপত্র আসেনি। দু’দিন হলো টেলিফোনও ধরছে না ওই নেতা।’একই ধরনের অভিযোগ অন্য এক শিক্ষার্থীর, পরীক্ষার ফরম পূরণের কথা বলে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল হুদা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিন হোসেন আমার কাছ থেকে দুই দফায় ৮ হাজার ৩০০ টাকা নিয়েছেন।
কলেজের নির্ধারিত ফি যেখানে আড়াই হাজার টাকা সেখানে কেন এত টাকা দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে এক ছাত্র বলে, প্রতি বছর কিছু টাকা বেশি নিয়ে এমন অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করিয়ে দেন নেতারা। ছাত্রলীগ নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, এবারও তাদের পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করিয়ে দেবেন। তাই তাদের কাছে নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অধ্যক্ষ সূর্যকান্ত বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি রোববারই আমাদের নজরে আসে। ঠিক কতজন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে টাকা দিয়েছে, তা আমরা নিশ্চিত নই। তবে টেস্ট পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থীর কাগজপত্র নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। পরে জরুরি ভিত্তিতে রোববার বোর্ডে লোক পাঠানো হয়। প্রবেশপত্র পেয়ে তারা পরীক্ষায় বসেছে।
এ ঘটনা জানাজানির পর মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মীর মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলী হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মাগুরা আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযুক্ত এই দুই ছাত্রলীগ নেতার মোবাইলে ফোন দিয়েও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।