ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দল এখন চরমে। এ কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পণ্ড হয়েছে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান। করা যাচ্ছে না পূর্ণাঙ্গ কমিটিও। কোন্দল নিরসন করে দ্রুততম সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা কয়েক দফা বৈঠক করেছেন সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে। সোমবার (২২ এপ্রিল) ইন্ডিপেনডেন্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সম্মেলনের ১১ মাস পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি পায়নি ছাত্রলীগ। দু-মাসের মাথায় দেয়া হয় কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম। বলা হয়েছিল দ্রুততম সময়েই চূড়ান্ত হবে কমিটি।
রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সভাপতি ও গোলাম রাব্বানী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার পর পরই নানা প্রশ্নে বিভক্ত ছাত্রলীগ। ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে শোভনের হার এবং ভাঙচুর-আগুনে বৈশাখের অনুষ্ঠান পণ্ড হওয়াকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিরোধের বড় নজির হিসেবে দেখছেন নেতাকর্মীরা।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে বার বার যোগাযোগে করা হলেও কথা বলতে রাজি হয়নি শোভন-রাব্বানী।
এদিকে, বিরোধ মিটিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডিতে শোভন-রাব্বানীর সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় ৫ নেতা। তারা কথা বলেছেন সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গেও।
ডাকসু নির্বাচনের পর শোভন-রাব্বানীর মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের পণ্ডের নেপথ্যেও ছিল এই বিরোধ, এমন ধারণা অনেকের।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান পণ্ড বিষয়ে ছাত্রলীগের এ বিষয়টা নিয়ে সর্বোচ্চ মহল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জানেন। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তিনি বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগ একটা বড় সংগঠন, বড় পরিবার। সুতরাং এখানে একটু মতানৈক্য, মতভেদ থাকতেই পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে আমি মনে করি না সেটা সহনশীল পর্যায়ের বাইরে গেছে। তবে কোন্দল মিটিয়ে দ্রুত পুরো কমিটি গঠনের ব্যাপারে আশাবাদী দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান আরও বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে আজকেও আবার চূড়ান্তভাবে নেত্রীর বার্তাটি আমরা পৌঁছে দিয়েছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে যে, হয়তো নেত্রী বিদেশে যাবার আগেই তারা একটু কমিটি দাঁড় করিয়ে তার হাতে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন।
ছাত্রলীগ নেতৃত্বের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ সভাপতির মনোভাব ইতোমধ্যে শোভন-রাব্বানীকে জানিয়ে দিয়েছেন নেতারা।