গাজীপুরের কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক কলেজে একাদশ শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ৫২০ টাকা দিয়ে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষক জানান, কলেজে ১৪ নভেম্বর থেকে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা এবং একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। শিক্ষকদের মধ্য থেকে শহীদ হাসানকে আহ্বায়ক করে একাদশ শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের একটি পরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়।
ওই শিক্ষক আরও জানান, শনিবার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা কমিটির আহ্বায়কের কাছে ৮০টি প্রবেশপত্র দাবি করেন। আহ্বায়ক ছাত্রলীগ নেতাদের জানান, প্রবেশপত্র অধ্যক্ষের অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে ওই ব্যাংক স্লিপ দেখিয়ে অফিস থেকে প্রবেশপত্র নিতে হবে।
গতকাল সোমবার সকালে পরীক্ষা কমিটি জানতে পারে ছাত্রলীগ নেতারা অফিস থেকে প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছে ৫২০ টাকা করে বিক্রি করছে। কমিটির আহ্বায়ক বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানালেও অধ্যক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরে পরীক্ষা কমিটির তিন সদস্য ইউএনওর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তুলে ধরেন। খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতারাও ইউএনও কার্যালয়ে যান। সেখানে ছাত্রলীগ নেতারা প্রথমে প্রবেশপত্র বিক্রি করার কথা অস্বীকার করে। পরে ৬০টি প্রবেশপত্র তারা নিয়েছে বলে স্বীকার করে।
প্রবেশপত্র ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে কীভাবে গেল জানতে চাইলে কলেজের হিসাবরক্ষক আবদুল মজিদ বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। বিষয়টি অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক বলতে পারবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। মূলত অধ্যক্ষের সহযোগিতায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর ও সাধারণ সম্পাদক এম আই লিকনসহ কয়েকজন নেতাকর্মী কলেজ অফিস থেকে প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করেছে।
এম আই লিকন দাবি করেন, তারা প্রবেশপত্র নিয়ে বিক্রি করেননি। এ ধরনের কোনো ঘটনাও ঘটেনি। এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে কলেজের অধ্যক্ষ ফেরদৌস মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে ইউএনও শিবলী সাদিক বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটতেছিল। পরে বিষয়টির মীমাংসা হয়ে গেছে।’