চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সড়ক উন্নয়নের কাজকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দফায় দফায় হামলার ঘটনায় উপজেলার কানুনগোপাড়া ডিসি সড়কের উন্নয়নকাজ বন্ধ রয়েছে। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ছুরিকাহত আতিকুল ইসলাম আতিক (৩৫) নামের এক যুবলীগ নেতাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে তিনটি গাড়ি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মারধর করে আহত করা হয়। এ ঘটনার পর সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় ৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কানুনগোপাড়া সড়ক উন্নয়নের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ৩০-৩৫ জন যুবক আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে উপজেলার অলি বেকারি এলাকায় সড়কের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে পাঁচ শ্রমিকের মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর আহত হয়। এ সময় তারা কোটি টাকা মূল্যের দুটি এক্সকাভেটর ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরের দিন গতকাল দুপুর ১টার দিকে ৮-১০ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী হাজির হাট এলাকায় একই সড়কে বালু ভরাটের সময় বাধা দিয়ে বালুর ডাম্পারচালক সুমনকে মারধর করেন এবং ডাম্পারটি ভাঙচুর করেন। এ নিয়ে বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের সারোয়াতলী গ্রামের বাড়িতে বৈঠক করতে গেলে ছাত্রলীগ পুনরায় হামলা চালায়। এ সময় আতিকুল ইসলাম আতিক (৩৫) ছুরিকাহত এবং একই পক্ষের নাদিমুল ইসলাম (৩০) ও কপিল উদ্দিন (৩০) আহত হন। গুরুতর আহত আতিকুলকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত আতিকুল ইসলাম বলেন, সড়কে বালু ভরাটের কাজটি শুরু থেকে তাঁরা করে আসছেন। হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁদের কাজে বাধা দিয়ে শ্রমিকদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান ও যুবলীগ নেতা সাখাওয়াৎ হোসেন খোকনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাঁদের ওপর হামলা চালান।
এ ব্যাপারে কলেজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম কাজেম বলেন, দুষ্কৃতকারীরা কখনোই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হতে পারে না।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় এবং আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। বৃহস্পতিবারের হামলায় তাঁদের পাঁচজন আহত হন এবং প্রায় কোটি টাকার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, অভিযোগ পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।