রাতের অন্ধকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রশাসন পরিস্থিতি ভয়ংকর করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের মঞ্চ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক।
নুরুল হক বলেন, রাত ১১টার পরেও অনেক ছাত্রী হল থেকে বের হয়ে গেছেন। অভিভাবক ডেকে রাতের অন্ধকারে তাদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। প্রাধ্যক্ষের কক্ষে অনেককে আটকে রাখা হয়েছিল। ছাত্রীদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। কোনো অপরাধ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে কিন্তু ছাত্রীদের এভাবে বের করে কর্তৃপক্ষ ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার(১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কবি সুফিয়া কামাল হলের বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে হল ত্যাগে বাধ্য করা হয়। এর প্রতিবাদে রাত দেড়টার দিকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এস এম ইয়াসিন আরাফাত একাই প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে হলের ফটকে অবস্থান নেন। পরে রাত দুইটার দিকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা ইয়াসিনের সঙ্গে যোগ দেন। শুক্রবার দেশের প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে অবস্থান শেষ করেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা।
বিক্ষোভ চলাকালীন হলের ভেতর থেকে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেত্রী ফটকের কাছে এসে বলেন, হলে কোনো সমস্যা নেই আপনারা চলে যান। সে সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে ছাত্রলীগের নেত্রীরা কিছু না বলে চলে যান। একই সময়ে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে দেখা যায়।
হল কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, রাত ৯টা থেকে কমপক্ষে ৫০ জনকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে সবাইকে একসঙ্গে বের করে দেওয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলের ফ্লোরে ফ্লোরে রাতে হাউস টিউটররা পাহারা বসান। ছাত্রীরা আতঙ্কে আছেন। তাঁরা বলছেন, মূলত যে ২৬ ছাত্রী ছাত্রলীগের নেত্রী ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন প্রথম দফায় তাঁদের বিচার করছে হল প্রশাসন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সাবিতা রেজওয়ানা বলেন, ‘আমরা অনেক ছাত্রীকে ডেকেছি। তাঁদের মোবাইল চেক করা হচ্ছে। তাঁরা বিভিন্ন ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে গুজব ছড়াচ্ছে। মুচলেকা দিয়ে তাঁদের স্থানীয় অভিভাবকদের সঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’