পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবক, গ্রামবাসী গতকাল শনিবার তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোস্তফা হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগ শুনে এসেছি। এত দিন মানসম্মানের ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি।’
এক ছাত্রীর মা জানান, দুই ছাত্রীকে কোরবানির ঈদের বন্ধ ঘোষণার আগে বৃহস্পতিবার ১টার দিকে কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন চালান প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয় ছুটির পর বিকেল ৪টার দিকে প্রলোভন দেখিয়ে আরেক ছাত্রীকে কক্ষে নিয়ে যৌন নির্যাতন চালান। এর মধ্যে এক ছাত্রী মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি তাঁর মাকে জানায়। মা যথাযথ ব্যবস্থা নেন। ওই মা বলেন, ‘চার-পাঁচ দিন পর্যন্ত মেয়ের রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করব।’
তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি কিছুই বলতে পারব না।’
সেখানে উপস্থিত আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ সুজা বলেন, ‘বিষয়টির সত্য-মিথ্যা কিছুই এখন বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে বলা যেতে পারে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মোতালেব হাওলাদার বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আসায় ১০ দিন আগে একটি সভা ডাকা হয়েছিল। সভায় তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে এখন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ায় তদন্ত করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষকের হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘সরেজমিন তদন্ত করে যদি প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত হন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানাব।’