করোনা ভাইরাসের কারণে ছুটি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। সেই সুবাদে ভেতরে চলছে গাছ কেটে বিক্রি করার মহোৎসব। গত কয়েকদিনে রাতের আঁধারে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই মেহেগুনি গাছ।
যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, গাছগুলো বিক্রির করে পলিটেকনিকের মসজিদ কমিটিকে টাকা দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটাতে সামাজিক বন বিভাগের অনুমতি নেয়া হয়নি। ফলে গাছ কাটা অর্থ তোছরুপেরও অভিযোগ উঠেছে।
গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘২০-২৫টি মরা গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কাটার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটির তিন সদস্যই এটি দেখভাল করছেন। তারা গাছ বিক্রির প্রায় ৮০ হাজার টাকা পলিটেকনিকের মসজিদের কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন।’
অধ্যক্ষের কথা অনুযায়ি যদি ২০ থেকে ২৫টি গাছ কাটা হয়ে থাকে। তাহলে এতো পুরানো গাছের দাম মাত্র ৮০ হাজার টাকা? আর টাকা গেল কোথায় এমন প্রশ্ন থেকেই যায়।
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, রাতের আধারে এই প্রতিষ্ঠানের তাজা ও মরা গাছগুলো ইচ্ছামত কাটা হচ্ছে গত প্রায় ৭-৮ দিন ধরে। এরপর কাটা গাছগুলো সূর্য ওঠার আগেই সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব গাছ কাটা হচ্ছে, সেখানে মরা পাতা ও মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। যেন কেউ সহজে বুঝতে না পারে সেখান থেকে গাছ কাটা হয়েছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটির মরা-তাজা মিলে দামি প্রায় ৫০টি গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে গত কয়েকদিনে।
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে গিয়ে গাছ কাটার প্রমাণও মিলেছে। গাছ কাটার পরে কোনো কোনো স্থানে লতা-পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে দায়িত্বরত কোনো কর্মচারী মুখ খুলতে চাননি।
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণার পর থেকে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটিও বন্ধ রয়েছে। আর সেই ফাঁকে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে।