মানিকগঞ্জে মাদক ব্যবসা, অছাত্রদের আবাসন ও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের আলিমুল হক ছাত্রাবাস। এসব ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী জড়িত বলে সাধারণ ছাত্রদের অভিযোগ। এদিকে ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ছাত্ররা। তাদের এখন তিনগুণ টাকা বেশি দিয়ে বাইরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে।
সরজমিন কলেজের আলিমুল হক ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা গেছে, গেট তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। হোস্টেলের আশপাশ জঙ্গলে ঠাসা। যেন জঙ্গলের ভিতর নির্মাণ হয়েছে ছাত্র হোস্টেলটি। গেটের ভেতরে বড় কয়েকটি গাছের গুঁড়ি রাখা হয়েছে। ছাত্রাবাসটির আলিমুল হক হল লেখা নামফলকটিও মুছে গেছে। দেওয়ালের রং মুছে গেছে। হলের পাশে থাকা এ কলেজের কয়েকজন ছাত্র জানান, দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ। দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এ কলেজে আসে লেখাপড়ার জন্য। কিন্তু এ কলেজের দুটি ছাত্রাবাসের মধ্যে আলিমুল হকের মধ্যেই ৯০ ভাগ ছাত্র থাকতো। কিন্তু ছয় মাস ধরে সেটি বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, হোস্টেলে মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন, বহিরাগত ছাত্ররা বাহির থেকে নারী নিয়ে ছাত্র হোস্টেলে রাখতো এ কারণে ছাত্র হোস্টেল বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী বুলবুল জানান, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। ছাত্রদলের কিছু কর্মী ও হাইস্কুলের কিছু শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ইরাদ কোরাইশী ইমন ও সদর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিফাত কোরাইশী সুমনের ছত্রচ্ছায়ায় তারা হোস্টেলে বিভিন্ন অপকর্ম চালাত। আমি অধ্যক্ষের সাথে আলাপ করেছি। আশা করছি দ্রুত হোস্টেল চালু হবে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ইরাদ কোরাইশী ইমন জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী বুলবুলের মদদে তার সহযোগী দুই ছাত্রলীগ নেতার মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের কারণে ছাত্রাবাস বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর বশির আহমেদ বলেন, ‘হোস্টেলে কিছু বহিরাগত ছাত্র নিরীহ ছাত্রদের সঙ্গে ঝামেলা করত। মাদক কারবার, মাদক সেবন ও কিছু অছাত্রের নারী সংক্রান্ত ঝামেলাও ছিল। ফলে হোস্টেলটি কলেজ কর্তৃপক্ষ বন্ধ রেখেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে হোস্টেলটি খোলার ব্যবস্থা করবে বলে তিনি জানান।