অদম্য মুন্নী আক্তার। সড়ক দুর্ঘটনায় মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। তারপরও রক্তমাখা শরীর নিয়েই শেষপর্যন্ত জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। সোমবার সকাল ৯টায় চাঁদপুর সদরের হরিণা ফেরিঘাটের পাশের গোবিন্দিয়া গ্রাম থেকে ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয় মুন্নী আক্তার।
এ সময় তার বাবা ও মা সামান্য আহত হন। পরে আহতদের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে ছুটে যায় মুন্নী আক্তার।
জানা গেছে, সদর উপজেলার হরিণা-চাঁপিলাতলী এডওয়ার্ড উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে মুন্নী আক্তার (১৪)। তার বাবা মাহবুব শেখ এবং মা লাকী আক্তার সকালে বাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্দেশে বের হন।
তাদের বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিক্শাকে বিপরিত থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্শা সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে সিএনজিচালিত অটোরিক্শা উল্টে যায়। এ সময় মুন্নী আক্তারের মাথা ফেটে যায় এবং শরীরে মারাত্মক আঘাত পায়। এই ঘটনায় তার বাবা ও মা সামান্য আহত হন।
দুর্ঘটনার পরপরই আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা আহত রক্তাক্ত মুন্নী আক্তারের মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেন। এরপর কিছুটা সুস্থ বোধ করে মুন্নী আক্তার।
এ সময় মুন্নী আক্তার তার বাবা মাকে জানায়, সে পরীক্ষায় অংশ নেবেই। যেই কথা সেই কাজ। ততক্ষণে পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমার হস্তক্ষেপে কিছুটা দেরি হলেও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে মুন্নী আক্তার।
ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, কেন্দ্রসচিব আব্দুল হান্নান মিয়াজী জানান, ইংরেজি বিষয় বেশ সুস্থভাবেই মুন্নী আক্তার পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। পরীক্ষা শেষে আহত মুন্নী আক্তার জানায়, অসুস্থতা নিয়ে হলেও সবগুলো বিষয় পরীক্ষা সম্পন্ন করতে চাই। এ জন্য সবার দোয়াও চায় মুন্নী।
দিনমজুর মাহবুব শেখের তিন ছেলে এবং এক মেয়ের মধ্যে মুন্নী আক্তার সবার বড়। বিদ্যালয়ে ছাত্রী হিসেবেও সে বেশ মেধাবী।