জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে - দৈনিকশিক্ষা

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে

শেকৃবি প্রতিনিধি |

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। 

আইন বর্হিভূতভাবে শিক্ষক নিয়োগে ২১ জনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমতি ও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন জ্যৈষ্ঠ শিক্ষক ও নিয়োগ প্রত্যাশী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শেকৃবির চারটি অনুষদে সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক পদে ৭৫ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ ডিসেম্বর ১০১ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। যা বিজ্ঞাপিত চাহিদার চেয়ে ২৬ জন বেশি। এর মধ্যে ২১ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদনের অপেক্ষায় রাখা হয়। যা ইউজিসি’র আইনের পরিপন্থি। ফলে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ অপেক্ষমান এই ২১ জন প্রার্থীর নিয়োগের অনুমোদন দিতে নারাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ইউজিসির আইনে কোনো কন্ডিশনাল (শর্ত সাপেক্ষে) নিয়োগ দেওয়া যায় না। যাদের অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে তাদের নিয়োগ দিতে হলে আমাদের কাছে অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু এটা ইউজিসির আইনে না থাকায় আমরা অনুমতি দিতে পারবো না।
এদিকে সেকশন অফিসার পদেও অতিরিক্ত ৮ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।  ইউজিসি’র অনুমতি ও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ না থাকার পরও ইনস্টিটিউট অব সিড টেকনোলজিতে পাঁচ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যত সংখ্যক পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা তত সংখ্যক পদেই নিয়োগ দেয়া উচিত। বেশি নিয়োগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়টি এক সময় বাজেট ঘাটতিতে পড়বে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। 

কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অ্যাপিয়ার্ড সনদ দিয়ে আবেদনকারীদের অনেককে ভাইভা কার্ড দেয়নি। কিন্তু পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে মাকসুদা বেগমকে পিএইচডি’র অ্যাপির্য়াড সনদ দিয়ে আবেদন করার পরেও তাকে ভাইবা কার্ড দেওয়া হয়েছে এবং তিনি নিয়োগও পেয়েছেন। ভাইবার আগের দিন মাকসুদা বেগমের পিএইচডির ফলাফল বের হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, কৃষিতত্ত্ব বিভাগে নিয়োগ বোর্ডে বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপাচার্যের জামাতা ও বিভাগের অধ্যাপক ড. মির্জা হাসানুজ্জামানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, উপাচার্য তার আপন ভাগ্নে মো. মাহবুব আলমকে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদানের জন্যই জামাতাকে বিশেষজ্ঞের পদে বসান। 

সূত্র জানায়, অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফাইন্যান্স বিভাগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. আনোয়ারুল হক বেগের মেয়ে তাহরিমা হক বেগকে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। তাহরিমা হক আশা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছে বলে জানা যায়। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, শেকৃবির নিয়োগ বিধিমালায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) নিয়োগ বিধি অনুসরণ করার কথা রয়েছে। ওই বিধির আলোকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি অটোমেটিকভাবে বাদ হয়ে যাওয়ার কথা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ দেওয়ায় কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক গাজী এম এ জলিলসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। 

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার সময় নেই। নিয়োগ নিয়ে কোনো কথা বলার দরকার নাই। ‘আই ডোন্ট ফিল অ্যানি নিড টু টক উইথ ইউ’। 

জনবল নিয়োগের আগে উপাচার্য বলেছিলেন, নিয়োগের পর নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। সাংবাদিকরা বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে উপাচার্য ক্ষীপ্ত হয়ে বলেন,    ‘তোমরা কি বিতর্ক করার জন্য আসছো?’

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067579746246338