জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের ব্যবহৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনের ছাত্র সংসদের জন্য নির্ধারিত রুম সিলগালা করেছে প্রশাসন। এতে শাখা ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী অফিস রুমটিতে প্রবেশ করতে পারছে না।
রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অবকাশ ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত রুমটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের কোনো কমিটি না থাকায় দীর্ঘদিন রুমটি অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। এরপর শাখা ছাত্রলীগের তরিকুল-রাসেল কমিটি পাওয়ার পর তারা ওই ফাঁকা রুমটি দখল করে এতে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
তবে সম্প্রতি আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’টি গ্রুপের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলশ্রুতিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ জবি শাখা ছাত্রলীগের এ কমিটি স্থগিত ও তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরপর পরই জবি শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি স্থগিতের পরিবর্তে বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামে অন্যান্য নেতা কর্মীরা। ছাত্রলীগের ব্যবহৃত ওই অফিসটি সিলগালা করতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও দেয় তারা।
এদিকে কমিটি স্থগিতের পর থেকেই কমিটি বাতিলের দাবিতে মিছিল ও শোডাউন দিয়ে আসছে কমিটির অন্যান্য নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ১৩ ফেব্রুয়ারি স্থগিত কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে আসলে দুই গ্রুপের অবস্থান ও মিছিল শোডাউনে উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পরে কমিটি বাতিলের দাবিতে মিছিলকারীরা ছাত্রলীগের অফিসটিতে তালা লাগিয়ে দেন।
এসময় সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল তাদের কিছু কর্মীসহ রুমটিতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ঘণ্টা দু’য়েক অবরুদ্ধ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের উপস্থিতে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এটি ছাত্রলীগের রুম নয়, তারা জাস্ট ব্যবহার করতো। সম্প্রতি রুম ব্যবহার নিয়ে সমস্যা হয়েছে, তাই সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে রুমটি বন্ধ রাখা হয়েছে। যখন দেখব সমস্যা নেই তখন খুলে দেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি আসলে এখনো জানি না, কেন বা কখন রুমটি বন্ধ করা হয়েছে। আমি প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলবো বিষয়টি নিয়ে। তখন হয়তো বিস্তারিত জানতে পারব।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী ছাত্র সংসদ বলে কিছু নাই। অবকাশ ভবনে দু’টি কক্ষ আছে, এর মধ্যে একটি ছাত্রীদের কমনরুম, অপরটি ছাত্রদের কমনরুম।’
‘ছাত্ররা ওই কক্ষটি ব্যবহার করতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে কক্ষটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও খুলে দেওয়া হবে’ বলেও জানান উপাচার্য।