বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জিউধরা সেরজন স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালটিতে স্থানীয় কোন্দলে উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত। রয়েছে শ্রেণিকক্ষ অবকাঠামো আসবাপপত্রসহ নানাবিধ সঙ্কট। একটি শিক্ষা প্রকৌশল ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষক অভিভাবকদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জিউধরা ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী জিউধরা সেরজন স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ শতক জমির ওপর স্থাপিত হয়। দীর্ঘদিনের ইতিহাস আর ঐতিহ্য বহন করছে এ বিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬ শতাধিক। শ্রেণিকক্ষগুলোর অবকাঠামো খুবই নাজুক। নেই কোনো পাকা ভবন। সেমিপাকা টিনশেটের দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি রুম থাকলেও সেটি আবার পলেস্তরা খসে খসে পরে বেড়িয়ে এসেছে ইট। জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় নাজুক এ কক্ষ দুটি ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে শিক্ষার্থীরা।
বাকি শ্রেণিকক্ষগুলো টিনসেটের একটি হল রুমে। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে ঘূর্ণিঝর সিডর পরবর্তী সময়ে একটি বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ডভিশনের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত অফিসকক্ষসহ ৪টি রুমে সেমিপাকা একটি রুম নির্মাণ করে দেয় ওই সংস্থা। একটি কক্ষে শিক্ষকদের বসার রুম আরেকটি রুমে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ। বাকি কক্ষ দুটিতে শ্রেণি কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) মাহতাব হোসেনসহ শিক্ষক রয়েছে ১০ জন, লাইব্রেরিয়ান একজন, অফিস সহকারী একজন ও চর্তুথ শ্রেণি কর্মচারী রয়েছে ২ জন। আয়া ও নাইট গার্ড পদ দুটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। গত বুধবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল একটি কক্ষের লম্বা টিনশেটের হল রুমে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মাহতাব হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কোন পাকা ভবন হয়নি। তবে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মাধ্যমে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিজ্ঞান ভবন সরকারি নির্মিত হয়। সে ভবনটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার পরে তা এখন বিধস্ত। সেনিটেশন ও ছাত্রছাত্রীদের খাবার পানির নেই কোনো ব্যবস্থা। ১ কিলোমিটার পায়ে হেঠে সরকারি পুকুর থেকে ছাত্রছাত্রীদের জন্য খাবার পানির আনতে হয় লোক দ্বারা।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউসুব আলী মৃধা বলেন, সদ্য মাত্র অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হয়েছি। তাও আবার মামলা মোকাদ্দমা ফেজ করতে হয়েছে। ইতোপূর্বে নজরুল ইসলাম মৃধা ছিলেন দীর্ঘ ২৬ বছর এ প্রতিষ্ঠানে সভাপতি। বিদ্যালয়ে কোনো উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি তৎকালীন। স্থানীয় সংসদ সদস্যর কাছে বিদ্যালয়ের জন্য একটি শিক্ষা ভবন নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয় অবহিত করা হয়েছে। তবে সরকারিভাবে একটি শিক্ষা ভবন নির্মাণ হলে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার মনোনিবেশন আরও বৃদ্ধি পাবে।
এ সম্পর্কে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, এ উপজেলায় ইতোমধ্যে যে সমস্ত বিদ্যালয়ে পাকা ভবন নির্মাণ হয়নি সেসব বিদ্যালয়গুলোর চাহিদা অনুযায়ী একটি তালিকা নির্ণয় করে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে পর্যায়ক্রমে সরকারিভাবে প্রতিটি বিদ্যালয় শিক্ষা ভবন নির্মাণ হবে।