সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে নয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাইছেন তৃতীয় ধাপে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলছেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে তারা জাতীয়করণর দাবিতে আন্দোলন করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না।
রোববার (৪ঠা জানুয়ারি) ১৫তম দিনেও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা। এরমধ্যে গত ৯দিন ধরে টানা অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা না হলে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। রোববার আমরণ অনশন কর্মসূচির ৯ম দিনে তারা বলেন, শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘোষণার বাস্তবায়ন ছাড়া ঘরে ফিরবেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে শিক্ষকদের এক অনুষ্ঠানে বলেন,কোথায় কোথায় জাতীয়করণ করতে হবে বা করতে হবে না, তা নীতিমালার ভিত্তিতে হবে। যখন তখন যে কেউ দাবি করলে সেটা পূরণ করা সম্ভব নয়। সেটা তো সকলকে অনুধাবন করতে হবে, বুঝতে হবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো: কামাল হোসেন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছি। আমরা সরকারের ওপর কোনো চাপ দিচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই আমরা। তিনি বলেন,২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। তখন শর্ত ছিল নিজস্ব জমি থাকতে হবে। এরপর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের স্কুলের জমি সরকারের নামে লিখে দিয়েছেন। এরপর মাত্র ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। কিন্তু অধিক সংখ্যক স্কুল জাতীয়করণ না হওয়ায় রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষকরা।
এদিকে শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, অনশনে থাকা শিক্ষকদের মধ্যে অধিকাংশ ঠাণ্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও কাশিতে ভুগছেন। রোববার পর্যন্ত ২৬০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (৩০শে জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনরত প্রাথমিকের শিক্ষকদের অনশনে ভেঙ্গে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহবান জানাতে এসেছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড. এ এফ এম মঞ্জুর কাদির। এসময় শিক্ষকেরা না না বলে সচিবের আশ্বাস নাকচ করে দেন। অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ খোকন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। কোনো আশ্বাসে আমরা আন্দোলন থেকে পিছু হটবো না। সরকার কৌশলে আমাদের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে উঠিয়ে দেয়ার পায়তারা করছে। তিনি আর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। কিন্তু তাদের বিদ্যালয়গুলো সব শর্ত পূরণ করেও জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত।
বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি শাহজাহান আলী (সাজু) বলেন, ‘জাতীয়করণ বঞ্চিত সারাদেশে এরকম কতটি স্কুল রয়েছে এটা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর জাতীয়করণের ঘোষণার তালিকা থেকে আমলারা কৌশলে তাদের বাদ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমলাদের বলুক কেন আমরা বাদ পড়েছিলাম।