জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা পাঁচদিন অবস্থান ধর্মঘট এবং আমরণ অনশনেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আশ্বাস না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার (১৬ই জানুয়ারি) বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের নেতা নজরুল ইসলাম রনি ক্ষোভ প্রকাশ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন,‘পাঁচ দিনের অবস্থান ধর্মঘটের পর গত সোমবার (১৫ই জানুয়ারি) থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিরা আমরণ অনশনে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরনের আশ্বাস আসেনি। এতে আমরা খুবই মর্মাহত হয়েছি। অনশনরত অবস্থায় কোন শিক্ষকের প্রাণহানি হলে এর সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
আমরণ অনশনে অংশ নেয়া ভোলার একটি কলেজের প্রভাষক আব্দুল হান্নান বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে জাতীয়করণ প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠান সরকারি হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যয় কমে আসবে। এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী হবেন। এতে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার কমে আসবে। তাই বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে।’
নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কালিপ্রদ দাশ বলেন, ‘দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে। এদেরকে উপেক্ষা করে সরকারের সোনার বাংলা গঠনের যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না।’
হিসাব বিজ্ঞানের আরেকজন প্রভাষক মোঃ বরাত আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘একই সিলেবাস ও একই পরিশ্রম করেও সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় আমাদের বেতন কম ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। তাই এসব বৈষম্য দূর করে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের জোড় দাবি জানাচ্ছি।’
বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের ব্যানারে গত বুধবার (১০ই জানুয়ারি) থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কনকনে শীতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা। মঙ্গবার (১৬ই জানুয়ারি) পর্যন্ত ৭ দিনে ৬৫ জন শিক্ষক প্রচণ্ড শীতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরমধ্যে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ১০ থেকে ১৪ই জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা পাঁচদিন অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিরা। এরপর সোমবার (১৫ই জানুয়ারি) থেকে আমরণ অনুশন শুরু করেন তারা। মঙ্গলবার আমরণ অনশনের ছিল দ্বিতীয় দিন। জাতীয়করণের এক দফা দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে এ পর্যন্ত ৬টি শিক্ষক সংগঠন একজোট হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে যাবেন না বলেও জানান তারা।