জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপে পাঁচটি হল নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে গাছ কাটতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই গাছ কাটার প্রতিবাদে গাছে কাফনের কাপড় পরিয়ে বিক্ষোভ করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। গাছ কাটার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পার্শ্ববর্তী স্থান থেকে ছাত্রদের একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
গতকাল সকাল থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পাশে ছেলেদের তিনটি হল নির্মাণের জন্য গাছ কাটা শুরু হয়। পরে শিক্ষার্থীদের বাধায় সকাল ১০টার দিকে গাছ কাটা বন্ধ হয়। পরে বেলা ৩টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের পরিবেশনায় গাছকাটা নিয়ে একটি প্রতিবাদী নাটিকা পরিবেশন করা হয়। নাটিকা শেষে কাটা গাছে কাফন পরিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
মিছিল-পরবর্তী বিক্ষোভ সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা উপাচার্যকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই সব স্টেক হোল্ডারের মতামত না নিয়ে এই অপরিকল্পিত উন্নয়নকাজ আপনি করতে পারবেন না।’
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান বলেন, ‘উপাচার্য বর্তমানে স্বৈরাচারী আচরণ করছেন। প্রকল্পের টাকা ছাত্রলীগের মাঝে ভাগ-বাটোয়ারার বিষয়ে সাংবাদিকরা উপাচার্যের কাছে জানতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের হেনস্তা করেন। একজন উপাচার্যের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়।’
দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘যখন এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হয় তখন থেকেই আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার অবস্থানে অটল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বৈরাচারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’ সংহতি জানিয়ে সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু। উল্লেখ্য, উন্নয়ন কাজের মহাপরিকল্পনাকে ‘অপরিকল্পিত’ অ্যাখ্যা দিয়ে তা বন্ধের দাবিতে দীর্ঘদিন যাবত্ আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।