জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক ছাত্রী একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছানোয়ার সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী বলেন, শিক্ষক সিরাজের হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন।
সে সময় ওই ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে তিনি ২৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তবে সাভারের সুপার মেডিকেল হসপিটাল সূত্রে জানা যায়, ২৪ সেপ্টেম্বর ভোররাত সাড়ে ৪টার সময় ওই ছাত্রী মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার সময় তিনি সমস্যার বর্ণনা দিয়ে বলেন. পাঁচ ঘণ্টা আগে তিনি ২৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন। কিন্তু তার মেডিকেল রিপোর্ট বলছে তিনি ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করেননি।
এই প্রতিবেদকের হাতে আসা মেডিকেল রিপোর্ট দেখে জাবি মেডিকেলের চিকিৎসক সামছুর রহমান লিটন বলেন, 'ওই মেয়ে যে সমস্যার কথা বলে আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন, তার কোনো প্রমাণ নেই মেডিকেল রিপোর্টে। কেউ ২৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খেলে তার পালস, অক্সিজেন সার্কুলেশন অস্বাভাবিক হয়ে পড়বে। কিন্তু এই মেয়ের রিপোর্ট বলছে, তিনি একেবারেই স্বাভাবিক ছিলেন। এমনকি হাসপাতালে ভর্তির পর তার পাকস্থলী ওয়াশ করাতে রাজি হননি।
ওই ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক থাকার পরও কেন তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে সাভারের সুপার মেডিকেল হসপিটালের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা তাকে বেডে অথবা কেবিনে ভর্তির পরামর্শ দিই। কিন্তু রোগী ও তার সঙ্গে আসা অভিভাবকরা তাকে আইসিইউতে রাখতে জোরাজুরি করেন। তাই আমরা তাকে আইসিইউতেই রাখি। এ ছাড়া আমরা তাকে রিলিজ করার পরও তিনি মেডিকেলে দুই দিন বেশি থেকেছেন।'
এ বিষয়ে জানতে ওই ছাত্রীকে পাঁচ দিন ধরে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার কাছের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ওই মেয়ে তাদের সঙ্গেও যোগযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন।