সাংবাদিক ও ছাত্রী মারধরের বিচারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দুটি প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৮টায় নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের সবকটি ফটক আটকে সেখানে অবস্থান নেন অবরোধকারীরা। অবরোধের কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখা ও জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট অবরোধ কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুল এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফটো সাংবাদিক বিল্লাল হোসেনকে মারধর করে মোবাইল-মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘটনাস্থলে থাকা চ্যানেল আই অনলাইনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হক সোহাগ দু’পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দেন। পরবর্তীতে ফটো সাংবাদিক বিল্লালকে আবারও মারধর করা হলে সোহাগ এতে বাধা দেন। এর জেরে সোহাগকে মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। সেসময় তার সঙ্গে থাকা সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের এক ছাত্রী শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হন।
ছিনতাই, মারধর ও লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে ওই দুই সাংবাদিক ও ছাত্রীর পৃথক তিনটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ অক্টোবর ৪৫তম আবর্তনের বাংলা বিভাগের শুভাশীষ ঘোষ, ৪৭তম আবর্তনের লোক প্রশাসন বিভাগের ইয়া রাফিউ শিকদার, মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সোহেল রানা নামের চার কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সাংবাদিকদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের চাপের মুখে গত ৪ অক্টোবর তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে ঢাকা টাইমসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাইয়ান বিন আমিন বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমে হামলার মূল হোতাদের বাদ দিয়ে চারজনকে বহিষ্কার করে। দুদিনের মাথায় হঠাৎ করে ওই চারজনেরও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। পরে একাধিকবার আশ্বাস পাওয়ার পরও বিচার হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিচারের নামে প্রহসনের কারণে আমরা অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। সুষ্ঠু বিচার না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।'