জাল সনদে শিক্ষকের উচ্চতর গ্রেড ভোগ - দৈনিকশিক্ষা

জাল সনদে শিক্ষকের উচ্চতর গ্রেড ভোগ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি |

সহকারী মৌলভী পদে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রসুলপুর বালিকা দাখিল মাদরাসায় যোগ দেন আজিজুল হক। চাকরিবিধি অনুযায়ী তাঁর ১২ হাজার টাকা স্কেলে (দশম গ্রেডে) বেতন পাওয়ার কথা। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের পর 'জাল সনদ' দাখিল করে ২২ হাজার টাকা স্কেলে (নবম গ্রেডে) বেতন উত্তোলন করে আসছেন তিনি।

আজিজুল হকের চাকরি প্রায় শেষপর্যায়ে। অর্থাৎ, গোটা চাকরি জীবনে ভুয়া সনদে উচ্চতর গ্রেডে বেতন তুলেছেন তিনি।

উপজেলার যশরা আয়েশা হাসান দাখিল মাদরাসার সহকারী মৌলভী আতাউর রহমান ও জিয়া উদ্দিন। নিম্ন গ্রেডে (দশম গ্রেড) ১২ হাজার টাকা করে বেতন পাওয়ার কথা তাঁদের। কিন্তু ভুয়া 'বিএড' সনদ দাখিল করে দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষক হিসেবে উচ্চ গ্রেডে (নবম গ্রেড) বেতন তোলেন তাঁরা। সেই হিসেবে প্রতিমাসে বেতন তুলছেন ২২ হাজার টাকা করে। অভিযোগ রয়েছে মাদরাসা সুপার মোখলেছুর রহমান তাঁদের ভুয়া বিএড সনদের মাধ্যমে উচ্চ গ্রেডে বেতন পাইয়ে দিচ্ছেন। বিনিময়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতিমাসে নিজে নিচ্ছেন পাঁচ হাজার টাকা করে।

স্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কেবল রসুলপুর বালিকা দাখিল মাদরাসা বা যশরা আয়েশা হাসান দাখিল মাদরাসা নয়; রসুলপুর ইউসুফিয়া দাখিল মাদরাসায় দুইজন, লামকাইন ওয়াহেদিয়া মাদরাসায় দুইজনসহ উপজেলার অনেক মাদরাসায় চলছে এমন অনিয়ম। 

জানা গেছে, গফরগাঁও উপজেলায় মোট ৬৬টি দাখিল, আলিম, ফাজিল মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন মাদরাসার মোট ৩৭ জন শিক্ষক ভুয়া সনদ দাখিল করে উচ্চতর গ্রেডে বেতন তুলছেন। মাদরাসাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া নিবন্ধন সনদেও চাকরি করছেন বহু শিক্ষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, গফরগাঁওয়ে জাল নিবন্ধন সনদে মাদরাসায় কয়েক শ শিক্ষক চাকরি করছেন। এতে শিক্ষিত বেকার যুবকরা বঞ্চিত হচ্ছে।

রসুলপুর বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, সহকারী মৌলভী আজিজুল হক নিম্ন গ্রেডে বেতন পাওয়ার কথা। তিনি কীভাবে কার মাধ্যমে উচ্চ গ্রেডে বেতন উত্তোলন করছেন জানি না। এ ব্যাপারে আমি চাপ প্রয়োগ করায় তিনি মাদরাসার প্যাডে একটি অঙ্গীকারনামা দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, 'পরবর্তীতে সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তিনি অতিরিক্ত উত্তোলন করা সব টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেবেন।'

রসুলপুর বালিকা দাখিল মাদরাসার অভিযুক্ত সহকারী মৌলভী আজিজুল হক প্রথমে বলেন, 'আমি অনিয়ম করে থাকলে সরকার আমাকে ছাড়বে না, প্রমাণিত হলে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেব।' পরে আবার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'মাদরাসার রেজুলেশনের ভিত্তিতে জেলা শিক্ষা অফিসার ফরোয়ার্ডিং করে দিয়েছেন।' 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, 'আমি আসার পূর্বে অনলাইনের মাধ্যমে এ অনিয়মগুলো হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।'

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'যশরা আয়েশা হাসান দাখিল মাদরাসা ও মাইজ বাড়ি দাখিল মাদরাসার বিষয়টি আমার নলেজে রয়েছে। দুদক ও আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। সনদ যাচাই বাছাইয়ের জন্য শিক্ষা বিভাগের একটি কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তারা বছরব্যাপী এ কাজটিই করেন। আমার দপ্তর থেকে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।' 

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004176139831543