সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার চয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাবেয়া খাতুন রুবির বিরুদ্ধে শিক্ষাগত ও কারিগরি যোগ্যতার কম্পিউটার শিক্ষার সনদ জালিয়াতির অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। জালিয়াতি করে নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছেন তিনি। চাকরি করেছেন ১০ বছর। এ সময়ে এমপিও বাবদ তুলেছেন ১৪ লাখ টাকা। সম্প্রতি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট তদন্তে এমন অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তাই, জাল সনদধারী শিক্ষককে এমপিও বাবদ নেয়া ১৪ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট তদন্তে জানা গেছে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মার্চ ওই বিদ্যালয়ে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক রাবেয়া খাতুন রুবি জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার) সাবেক ‘নট্রামস’ থেকে যে ডিপ্লোমা সনদ (সিরিয়াল নং- ১৭২০৭ ও রেজি নং- ১৮৩০৭) দেখিয়ে কম্পিউটার শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন তা ভুয়া বলে সন্দেহ হয়।
পরবর্তী সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর থেকে বগুড়া জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি নেকটারের পরিচালকের কার্যালয়ে রাবেয়া খাতুন রুবির কম্পিউটার বিষয়ের সনদটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। রাবেয়া খাতুন রুবির কম্পিউটার ডিপ্লোমা কোর্সের সনদটি যাচাই-বাছাই শেষে জাল ও ভুয়া বলে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরকে জানায় নেকটার।
জাল ও ভুয়া সনদের চাকরি করায় রাবেয়ার এমপিওভুক্তির তারিখ ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১মে থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর সরকার প্রদত্ত ১৪ লাখ ৯ হাজার ৬৫০ টাকা এবং ওই তারিখের পরে তার উত্তোলিত সব টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের থেকে চিঠি পাঠানো হয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে।
সহকারী শিক্ষক রাবেয়া খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমি ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। পরে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়ার সাবেক নট্রামসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সনদ অর্জন করি। পরবর্তী সময়ে সেই সনদে এমপিওভুক্ত হয়ে চাকরি করে আসছি।
প্রধান শিক্ষক শাহ আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষক রাবেয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি বিধি মোতাবেক তার বেতন ভাতাদি বন্ধ রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় কেন তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে তাকে নোটিশও দেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম জাহিদুজ্জামান কাকন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শ দেয়া হয়েছে।