গৌরবময় ৪৮ বছর পার করল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। শনিবার (১২ জানুয়ারি) ৪৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস দেশের একমাত্র আবাসিক এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আহসান।
দিবসটি উদযাপনে জাঁকজমকপূর্ণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল ১০টায় দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেছেন, ৫০ বছর পদার্পনে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেমন দেখতে চাই, তা এখনই ভাবতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শুভকাল শুরু হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শীঘ্রই শুরু হচ্ছে। স্বপ্ন নিয়ে আনন্দ চিত্তে আমাদেরকে এ প্রকল্পের কাজ সফল করতে হবে।
সকাল সাড়ে ১১টায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দুপুর আড়াইটায় পুতুল নাচ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৫টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। সন্ধ্যা ৭টায় একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন লোকসঙ্গীত সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও শীতের অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে সুখ্যাতি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে ৭০০ একরের সবুজ ক্যাম্পাস। রাজধানী ঢাকা থেকে ৩২ কিলোমিটার উত্তরে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ৬৯৭ দশমিক ৫৬ একর আয়তনের বিশাল জায়গাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে 'জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়' অধ্যাদেশের আওতায় অর্থনীতি, ভূগোল, গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগে মোট ১৫০ শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদ ও ৪টি ইনস্টিটিউটের অধীনে ৩৪টি বিভাগে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন। ৪৮ বছরের পথচলায় এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণার নানা ক্ষেত্রে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র' নির্মাণের মাধ্যমে বিজ্ঞানচর্চার অনন্য সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। প্রাণিবিদ্যা বিভাগে কীটপতঙ্গের জিনের ডিএনএ বারকোডিং করা হচ্ছে, যা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম। এ ছাড়াও প্রাণিবিদ্যা বিভাগ বড় পরিসরে প্রজাপতি মেলা ও পাখিমেলার আয়োজন করে। এখানে রয়েছে দেশের একমাত্র প্রজাপতি পার্ক। দেশের সর্বপ্রাচীন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। উয়ারী বটেশ্বর আবিস্কারে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের রয়েছে উল্লেখযোগ্য সাফল্য।