জন্ম থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আরিফুজ্জামান লিমন ও মোস্তফা কামাল মঞ্জু। তারা দুজনেই অন্ধত্বকে জয় করে এগিয়ে যেতে চায় অনেক দূর। সে পথে অনেকটা এগিয়েছে তারা। দুজনেই এবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। শ্রুতি লেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দিচ্ছে তারা।
শনিবার সকালে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সরকারি আদিতমারী জিএস মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হবার আগ মুহূর্তে কথা হয় আরিফুজ্জামান লিমন ও মোস্তফা কামাল মঞ্জুর সঙ্গে। তারা দুজনেই স্বপ্ন দেখে শিক্ষক হবার। শিক্ষাকে জয় করতে চায় তারা।
আরিফুজ্জামান লিমন উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় লিমন। পিএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৪ পেয়েছিল। আর মোস্তফা কামাল মঞ্জু আদিতমারী উপজেলা দুরাকুটি গ্রামের দিনমজুর লাল মিয়ার ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে মেজ। পিএসসি পরীক্ষায় মঞ্জু পেয়েছিল জিপিএ-৩ দশমিক ৯২।
তারা দুজনেই উপজেলার সাপ্টিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ব্রেইল পদ্ধতি লেখাপড়া করছে। ওই স্কুলের রিসোর্স শিক্ষক এরশাদ আলী জানান, লিমন ও মঞ্জু দুজনেই মেধাবী ছাত্র। এ বছর তারা জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। আশা করি, দুজনেই ভালো ফলাফল করবে।
সরকারি আদিতমারী জিএস মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক প্রধান ও কেন্দ্র সচিব শওকাত আরা সিদ্দিকা বলেন, এই কেন্দ্রে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ওই শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সে ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট। নিয়ম অনুযায়ী অন্য শিক্ষার্থীদের চাইতে ওই দুই শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বেশি দেয়া হচ্ছে।
আদিতমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ এস এম আরিফ মাহফুজ বলেন, এবার এই উপজেলা থেকে দুজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় দিচ্ছে বলে জেনেছি। তাদের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।