টর্চার সেলের সঙ্গে ছাত্রলীগ পরিচিত নয় : লেখক ভট্টাচার্য - দৈনিকশিক্ষা

টর্চার সেলের সঙ্গে ছাত্রলীগ পরিচিত নয় : লেখক ভট্টাচার্য

ঢাবি প্রতিনিধি |

বুয়েটের বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, টর্চার সেলের সঙ্গে ছাত্রলীগ পরিচিত নয়। টর্চার সেলের নামও ভালোভাবে জানে না ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একটি মহল চক্রান্ত করে ছাত্রলীগের সঙ্গে টর্চার সেলকে জড়াচ্ছে।

এ বর্বর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মৌন র‌্যালি শেষে তিনি এমন দাবি করেন। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে এই র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের যে ২০১১ নম্বর কক্ষে কয়েক ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চালিয়ে তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়। ওই কক্ষের আবাসিক ছাত্র বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপ সম্পাদক অমিত সাহা, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার বুয়েটে তদন্ত চালিয়ে ভিডিও ফুটেজ দেখে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় আরও তিনজনকে। বৃহস্পতিবার অমিতসহ আরও দুজন গ্রেফতার হয়।

এদিকে আবরার হত্যার পর বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অতীতের বিভিন্ন নির্যাতনের কথা উঠে আসছে। তাতে শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বরসহ বিভিন্ন হলের একাধিক কক্ষ ও কমনরুমকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

মৌন র‌্যালিটি পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে কলা ভবন, টিএসসি মোড়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ফুলার রোড ঘুরে ভিসি চত্বরে এসে শেষ হয়।

এদিকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ জানতেন যে শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন, গালাগাল ও উত্ত্যক্ত করছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। কিন্তু অপরাধীদের বিরুদ্ধে তাদের ব্যবস্থা নেয়ার নজির বিরলই বটে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ১০ শিক্ষক ও তিন সহকারী প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে। হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নির্যাতনের কথা তারা জানতেন। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সঠিকভাবে পদক্ষেপ নিতেন, তবে আবরারকে এভাবে মরতে হতো না।

বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবরার ফাহাদ। রোববার রাতে তাকে হলের কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছেন ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী। এ নিয়ে দেশজুড়ে ক্ষোভ চলছে।

বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি একেএম মাসুদ বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে এমনটি ঘটে আসছে। এটি রাতারাতি কোনো ঘটনা না। নিঃসন্দেহে এটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা। অবশ্য শিক্ষকদেরও।

তিনি বলেন, শিক্ষক সমিতি গতকাল একটি বৈঠক করেছে। সেখানে হলগুলোর প্রতিনিধিরা বলেছেন- নির্যাতন নিয়ে তারা সতর্ক ছিলেন। কিন্তু উচ্চপর্যায় থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারেননি।

মাসুদ বলেন, এখানে ভর্তি হওয়ার পর মেধাবী শিক্ষার্থীরা কেন উচ্ছৃঙ্খল হতে যাবে? এটা হতাশারই ঘটনা। উদ্বেগের আরেকটি বিষয় হচ্ছে, রাজনৈতিক চাপে তারা সর্বদা অস্বীকার করার মেজাজে থাকেন।

শিক্ষার্থীদের প্রতি খেয়াল রাখতে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের একজন হচ্ছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) বলে জানালেন শিক্ষক সমিতির এ সভাপতি।

বেশ কয়েকজন শিক্ষক বলেছেন, হল কর্তৃপক্ষ উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও সেখান থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে।

অধিকাংশ শিক্ষককের মত, হিতে বিপরীত হওয়ার ভয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিতে ভয় পাচ্ছেন। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দেয়ার পরও অপরাধীদের সাজার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা বিরল।

এক বুয়েট শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন যদি সঠিক পদক্ষেপ নিত এবং সক্রিয় হতো, তা হলে আবরারকে মরতে হতো না, আর ছাত্রলীগও এতটা সাহসী হয়ে উঠত না।

ডিএসডব্লিউ অফিসের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, এটি আমার ব্যর্থতা না, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা। মাস তিনেক আগে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। আমার সামনে এসে কেউ যদি বলতে পারেন যে আমি তাদের পরিস্থিতি মানিয়ে চলতে বলেছি, তবে আমি তখনই পদত্যাগ করব।

বুয়েটির এক শিক্ষক বলেন, এমন ঘটনা অনলাইনে ছড়িয়ে দিতে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে সিএসই বিভাগ থেকে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছেন। জুলাই পর্যন্ত সেখানে ১০৩টি ঘটনার প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059540271759033