টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কের শ্যামপুর ও ফুলতলায় নির্মিত নিম্নমানের ডাইভারসন বন্যার পানিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে যান চলাচল বন্ধ এবং প্লাবিত হতে পারে নতুন নতুন এলাকা। এতে দুর্ভোগে পড়বেন লক্ষাধিক মানুষ। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পার্শ্ব বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মূল বাসস্ট্যান্ড এলাকাও প্লাবিত হবে। বিঘ্ন হবে যান চলাচল। সরজমিনে শুক্রবার বিকালে গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলেঙ্গা-ভূঞাপুর সড়কে ১০টি ব্রিজ ও ১টি কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
ব্রিজগুলো ভেঙে যান চলাচলের জন্য পাশেই ডাইভারসন বানানো হয়েছে। বাঁধের পশ্চিম পার্শ্বের গ্রামগুলো ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ব্রিজের ভাঙা ইট ও আবর্জনা দিয়ে ডাইভারসন নির্মাণ করেছেন ঠিকাদাররা। ডাইভারসনের নিচ দিয়ে বন্যার পানি প্রবল বেগে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কয়েকটি ডাইভারসনের বাঁধ খুব নাজুক হয়ে পড়েছে।
মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রী ও মালবাহী যানগুলো। বাঁধ ভেঙে গেলে একদিকে বন্ধ হয়ে যাবে যান চলাচল। অন্যদিকে কালিহাতী ও ঘাটাইল উপজেলার পূর্বাঞ্চলের অসংখ্য গ্রাম তলিয়ে যাবে।
টাঙ্গাইল থেকে ভূঞাপুরগামী জোবায়ের হোসেন নামের এক ট্রাকচালক বলেন, নিম্নমানের ডাইভারসনের বাঁধগুলো পানিতে নরম হয়ে গেছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
ভূঞাপুর থেকে এলেঙ্গাগামী আসিফ মিয়া নামের বাসযাত্রী বলেন, ডাইভারসন যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
বন্যার কারণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬টি দাখিল মাদরাসা রয়েছে। উপজেলার গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নের প্রায় সব ক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে গেছে পানির নিচে।
সরজমিনে বন্যাকবলিত বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বিদ্যালয় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
আবার অনেক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও অফিস কক্ষে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি। পানির স্রোতে কারণে অনেক বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠগুলোতে চলছে মাছ মারার ধুম। পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পিএসসি, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। এদিকে বন্যায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হওয়ায় ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।