আগামী ১৫ জুনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার তাগিদ দিয়ে নোটিশ জারি করেছে রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইলের সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা এবং প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের দোহাই দিয়ে করোনার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বেতন দিতে বলা হয়েছে। প্রায় আড়াই মাস প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পর কোন সংক্রমনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দিয়ে যখন দেশ যাচ্ছে, সেসময় এ ধরনের নোটিশ জারি করায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে। অভিভাবকদের মতে, স্কুল ফান্ডে থাকা টাকা দিয়েই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা এবং প্রতিষ্ঠানের কাজ করা সম্ভব তবুও শিক্ষার্থীদের বকেয়া বেতন-ভাতা দিতে চাপ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি মে মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বকেয়া বেতন পরিশোধের তাগিদ দিয়ে নোটিশ জারি করেছে সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ এর কর্তৃপক্ষ। নোটিশে আগামী ১৫ জুনের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া স্কুলের অফিস কক্ষে ১২ জুনের মধ্যে প্রথম সাময়িক প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষার খাতা জমা দিতে বলা হয়েছে অভিভাবকদের। আর ২০ জুনের মধ্যে বোল্ড আউট করা উত্তরপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে অভিভাবকদের। এছাড়া ৮ জুনের মধ্যে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হ্যান্ড রাইটিং খাতা জমা দিতে বলা হয়েছে।
যদিও শিক্ষার্থীদের বেতন চেয়ে নোটিশ জারি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। তারা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, শিক্ষকদের বেতন এবং প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের দোহাই দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেতন দিতে বলা হয়েছে। যদিও করোনা এই ক্রান্তিকালে প্রায় সবগুলো পরিবারই অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। মে মাস পর্যন্ত বকেয়া বেতন বাবদ এতগুলো টাকা একবারে দেয়া কারো পক্ষেই এই মুহূর্তে সম্ভব না।
তারা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে আরও বলেন, প্রতিষ্ঠান ফান্ড থেকেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা চালানো সম্ভব। এই মুহূর্তে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ চলছে। এমন সময়ে টিউশন ফি জমা দিতে গেলে অনেক অভিভাবকই সংক্রামিত হবেন। এছাড়া ঢাকা বোর্ড থেকেও টিউশন ফি জমা নিতে চাপ না দিতে স্কুলগুলোকে বলা হয়েছে কিন্তু তা তোয়াক্কা করছে না সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের বেতন আদায়ের জন্য নোটিশ জারি করার কথা স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান মোল্লা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের বেতন থেকেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা এবং প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় মেটানো হয়। দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের বেতন নিতে পারিনি। তাই বকেয়া বেতন-ভাতা ১৫ জুনের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে অভিভাবকদের।
তিনি আরও বলেন, সরকারি অফিসগুলো সীমিত পরিসরে ১৫ জুন পর্যন্ত খুলে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও প্রশাসনিক কাজে স্কুল কলেজগুলোর অফিসকক্ষ খুলে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরাও বেতন-ভাতা আদায়ের নোটিশ জারি করেছি।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে ২০০ জন শিক্ষক থাকলেও তাদের মধ্যে ৫০ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত। বেশিরভাগ শিক্ষকের বেতন ভাতা স্কুল কর্তৃপক্ষ বহন করে। শিক্ষকরা অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সার্বিক বিবেচনায় অভিভাবকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করার জন্য বলা হয়েছে।