টিউশন ফি দেয়ানেয়ায় অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানকে মানবিক হওয়ার আহ্বান - দৈনিকশিক্ষা

টিউশন ফি দেয়ানেয়ায় অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানকে মানবিক হওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

টিউশন ফি  আদায়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উভয় পক্ষকে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি ফি না পায় সেক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য খরচ কোথা থেকে আসবে প্রশ্ন রেখে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এতে শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য সুখকর হবে না।’ আবার শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা যারা করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের কথাও ভাবতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়গুলো দেখবন।’ 

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমরা শুনছি কোথাও কোথাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ অনড়। আমরা আশা করছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ও অভিভাবকরা এ বিষয়ে মানবিক আচরণ করবেন। 

তিনি আরও বলেন, স্পোর্টস বা মিলাদ মহফিলের ফিয়ের মত কিছু ফি আছে যেগুলো হয়তো স্কুল কলেজ বন্ধের সময়ে প্রযোজ্য নয়। বেশ কিছু ফি আছে যেগুলো এড়াবার সুযোগ নেই। সেসব বিষয়ে আমরা কিছু নির্দেশনা আমরা দিয়ে দিবো। ফি সবার জন্য এক করা উচিতও হবে না। যেমন সরকারি কর্মচারীদের আয় কিন্তু কমেনি। আবার অনেক ব্যবসা ক্ষেত্র ক্ষতির সম্মুখীন হননি। যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারাই যাতে স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখবেন।  

ডা. দীপু মনি আরও বলেন, তবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন এমন কোন অভিভাবককে যদি টিউশন ফিয়ের জন্য ছাড় না দেয়া হয় সেক্ষেত্রে আমাদের জানাবেন। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করবো। 

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমরা আশা করছি এসএসসি পরীক্ষা পেছাতে হবে না। তবুও আমরা প্রতি নিয়ত আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করছি। আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের যদি আরও কিছু ঘাটতি থাকে তা বিশেষ পরিচর্যার মাধ্যমে তা পূরণের উদ্দেশ্যেই আমরা সীমিত পরীসরে ক্লাস করানোর কথা চিন্তা করছি। তবে, সব কিছুই পরিস্থিতি বিবেচনা করে নেয়া হবে। 

তিনি বলেন, যদি পরীক্ষা পেছানোর প্রয়োজন হয় তাহলে যেকোন ধরণের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনা করে এবং তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়েই নেয়া হবে। সার্বিক বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েই পরীক্ষা পেছানো না পেছানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোন একভাবে মূল্যায়ন করেই শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হবে। করোনা ভাইরাস থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাক নির্বাচনী বা নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনায় নভেম্বরে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা আছে। সে সময় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। তাছাড়া নানাভাবে শিক্ষার্থীদের অ্যাসেসমেন্টের চেষ্টা চলছে। সার্বিক বিবেচনায় মূল্যায়ন করেই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হবে।   

তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটির মেয়াদ ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খোলা যায় কিনা সে বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।

তিনি বলেন, এবার অন্যান্য বছরের মতো বই উৎসব করা যাবে না। তবে, বিকল্প কিভাবে বইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া যায় তা ভাবছে মন্ত্রণালয়।  
 
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের কেউ দাবি করছেন অটোপাস, কেই বিরোধীতা করছেন, আবার কেউ বলছেন আগের তিন বছরের পরীক্ষার ফল গড় করে নম্বর দিয়ে তাদের ফল প্রকাশ করা হোক।  পরীক্ষা ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না। পরীক্ষার বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ের সাথে আমরা কথা বলেছি। আমরা ইঙ্গিত পাচ্ছি আসছে ডিসেম্বর, জানুয়ারিতে করোনা প্রকোপ বাড়তে পারে। 

আগামী শিক্ষাবর্ষে স্কুলগুলোতে ভর্তির বিষয়ে পরীক্ষা হবে কি হবে না, হলে কিভাবে? এসব প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি বিচেনায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এবং যথাসময়ে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেয়া হবে। 
 
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা নেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অনুশীলনটা শুরু করতে চাচ্ছি। ’ 
 
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। কয়েক দফায় সেই ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়। আজকের নতুন ঘোষণায় সেই ছুটির মেয়াদ ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলো। 

করোনাভাইরাসের সংকটের মুখে দেশের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষামূলক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বাতিল হয়েছে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা। সবাইকে অটোপাস দেয়ার ঘোষণা হয়েছে। প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষাও হবে না। সবাইকে অটোপাস দেয়া হয়েছে। 

স্কুল বন্ধ হলেও শিক্ষার্থীরা যাতে বাড়িতে বসে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারে সে লক্ষ্যে সরকার সংসদ বাংলাদেশ টিভিতে গত ২৯ শে মার্চ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের ও ৭ এপ্রিল থেকে কারিগরি ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য দূরশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। এছাড়া স্কুলগুলো অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033450126647949