বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর টিউশন ফি ব্যয়ের নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু এ নীতিমালা তৈরিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সহযোগিতা করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বছর শিক্ষা অধিদপ্তরকে নীতিমালার খসড়া তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হলেও এখনো পর্যন্ত তা পাঠানো হয়নি। সে পরিপ্রেক্ষিতে ফের চিঠি দিয়ে টিউশন ফি ব্যয়ের নীতিমালা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে।
ঢাকার স্বনামধন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ডোনেশন, টিউশন ফি ও কোচিং ফিয়ের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে কয়েকশ কোটি টাকা রয়েছে বলেও তথ্য আছে দৈনিক শিক্ষার কাছে। এ টাকা শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে ব্যবহারে টিউশন ফি ব্যয়ের নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। গত ২৪ থেকে ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি ব্যয়ে নীতিমালা তৈরির প্রস্তাব করেছিলেন বিভিন্ন জেলার ডিসিরা।
গত নভেম্বরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নীতিমালার খসড়া তৈরির নিদের্শ দেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি গত ২০ নভেম্বর শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর টিউশন ফি ব্যয়ের খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু খসড়া নীতিমালাটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি। স্বনামধন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আদায় করা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের নীতিমালা তৈরিতে অনিহা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের।
এ পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ফের চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। রোববার (৩ মার্চ) শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো চিঠিতে টিউশন ফি ব্যয়ের নীতিমালা জরুরি ভিত্তিতে তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।
দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীসহ জেলা শহরগুলোতে কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের নিজস্ব তহবিলে টিউশন ফির মোটা অংকের টাকা জমা থাকে। এ টাকা ব্যয় হয় কমিটির সভাপতি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের ইচ্ছায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে। টিউশন ফি ব্যয়ের নীতিমালা তৈরির সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় হবে বলে দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।