সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্রের খুব কাছাকাছি অবস্থিত ‘তারা’। এটি প্রধানত প্লাজমা তথা আয়নিক পদার্থ দিয়ে গঠিত। এর ব্যাস প্রায় ১৩ লাখ ৯২ হাজার কিলোমিটার, যা পৃথিবীর ব্যাসের ১০৯ গুণ, ভর পৃথিবীর ভরের ৩ লাখ ৩০ হাজার গুণ। এই ভর সৌরজগতের মোট ভরের ৯৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ কারণেই সৌরজগতের প্রাণকেন্দ্র বলা হয় সূর্যকে। সম্প্রতি এই সূর্য সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য জানাতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে স্থাপিত ডেনিয়েল কে ইনোউয়ে টেলিস্কোপ সূর্যপৃষ্ঠের এমন ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছে, যা এর আগে কখনো দেখা সম্ভব হয়নি। সৌর দূরবীক্ষণ যন্ত্রে সৌরজগতের কোষের যে ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তা যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্সাস অঙ্গরাজ্যের প্রায় সমান।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডেনিয়েল কে ইনোউয়ে সোলার টেলিস্কোপ (ডিকেআইএসটি) বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো সৌর দূরবীক্ষণ যন্ত্র। এটি সূর্যের এমন সব ছবি তুলতে পেরেছে, যা দেখলে যে কারো মনে হতে পারে, অনেকগুলো উজ্জ্বল কোষ পাশাপাশি বসে আছে। সূর্যের এই কোষগুলোর একেকটির আয়তন কমবেশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্সাস অঙ্গরাজ্যের সমান। উজ্জ্বল ঐ জায়গাগুলোতে প্রতিনিয়ত উত্তপ্ত গ্যাস ও লাভা উদ্গীরণ হচ্ছে। কোষগুলোর সংযোগস্থল কোষগুলোর মতো তেমন উজ্জ্বল নয়। নালার মতো দেখতে এসব অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকায় গলিত পদার্থ গিয়ে শীতল হয়।
সূর্যের কোষের এই ছবি তুলে বিজ্ঞানীরা সূর্য সম্পর্কে আরো জানার বিষয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। সৌর পদার্থবিজ্ঞানীদের মতে, আগামী দিনের সৌরবিজ্ঞানের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে পারে এবারের আবিষ্কার। এর আগে এত উজ্জ্বল সূর্য কণার ছবি তুলতে পারেনি কোনো টেলিস্কোপই। এবারের ছবিতে সূর্যের কণাগুলোতে অনেক বেশি উজ্জ্বল অবস্থায় দেখা গেছে। ন্যাশনাল সাইন্স ফাউন্ডেশনের পরিচালক ফ্রান্স করডোভার বলেন, এই টেলিস্কোপের পাঠানো ছবি সূর্য সম্পর্কে আমাদের ভালোভাবে জানতে সাহায্য করবে। সৌরঝড় সম্পর্কেও অগ্রিম তথ্য পেতে সাহায্য করবে। এখন যেখানে মহাশূন্যের আবহাওয়া সম্পর্কে ৪৮ মিনিটের আগাম তথ্য জানা যায়, সেখানে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগের তথ্য পেতে সাহায্য করবে এই প্রকল্প। জ্যোতির্বিজ্ঞানের এনএসএফ বিভাগের প্রকল্প পরিচালক ডেভিড ববোলটস বলেন, ‘আমরা সূর্য সম্পর্কে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহের কাজ করছি।’—সূত্র :দ্য উইক