২০ লাখ টাকার বেশি ডাকঘর সঞ্চয়ে রাখা যাবে না - দৈনিকশিক্ষা

২০ লাখ টাকার বেশি ডাকঘর সঞ্চয়ে রাখা যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এবার ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের বিনিয়োগসীমা তিন ভাগের দুই ভাগ কমিয়ে দিল সরকার। এতে আগে যে গ্রাহক এই স্কিমে ১০০ টাকা বিনিয়োগ করতে পারতেন, এখন পারবেন ৩৩ টাকা। মধ্যবিত্ত, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী ও নারীরাই সাধারণত এ স্কিমের আওতায় আমানত রাখেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে অবশ্য তারিখ দেওয়া রয়েছে গত ২০ মে এবং ওইদিন থেকেই তা কার্যকর।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন থেকে ডাকঘর সঞ্চয় কর্মসূচিতে একক নামে বিনিয়োগ করা যাবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত, যা আগে ছিল ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর যুগ্ম-নামে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা আগে ছিল ৬০ লাখ টাকা। এখন সেটি কমিয়ে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে।

জানতে চাইলে আইআরডি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, 'এই সঞ্চয় স্কিম নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। অন্য সঞ্চয় স্কিমের সুদ হার কমে যাওয়ায় সবাই এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠানও এখানে অর্থ জমা করছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে অর্থ প্রবাহ কমে গেছে।'

স্কিমের আওতায় ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক (সাধারণ হিসাব), ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক (মেয়াদি হিসাব) এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক (বোনাস হিসাব)—এ তিন ধরনের হিসাব ছিল। ১৯৯২ সাল থেকে বোনাস হিসাবটি বন্ধ রয়েছে। বাকি দুটি চালু।

হিসাব দুটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সব শ্রেণি-পেশার বাংলাদেশি নাগরিকই এতে টাকা রাখতে পারেন। আবার নাবালকের পক্ষেও টাকা রাখার সুযোগ রয়েছে। উভয় হিসাবেই নমিনি নিয়োগ যেমন করা যায়, তেমনি তা পরিবর্তন করা যায় এবং বাতিলও করা যায়। অন্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে, সাধারণ হিসাবে এক মাসেও সুদ তোলা যায়। আর মেয়াদি হিসাবে ছয় মাস পরপর সুদ তোলা যায়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্বিনিয়োগ করার সুবিধাও রয়েছে এতে।

সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে মুনাফার হার সাড়ে ৭ শতাংশ। এ ছাড়া তিনবছর মেয়াদি হিসাবের মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তবে মেয়াদ পূর্তির আগে ভাঙানোর ক্ষেত্রে এক বছরের জন্য মুনাফা ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। দুই বছরের জন্য ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ।

ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের মুনাফার হার প্রায় অর্ধেক কমিয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল আইআরডি। এ নিয়ে প্রায় সব মহলে সমালোচনা হলে মুনাফার হার না বদলিয়ে আগেরটাই বহাল রাখে সরকার। নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে তা কাযর্কর করা হয় গত ১৭ মার্চ থেকে। দুই মাস পার হতেই এবার আরেক প্রজ্ঞাপন জারি হলো বিনিয়োগসীমা নিয়ে।

ডাক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলের সবচেয়ে পুরোনো স্কিম এটি। চালু হয় ব্রিটিশ সরকারের আমলে ১৮৭২ সালে। ডাক-হরকরাদের কিছুটা সুবিধা দিতে এটি চালু করা হয়েছিল। বাংলাদেশে তা চালু হয় ১৯৭৪ সালে সাধারণ মানুষের সঞ্চয়প্রবণতা বৃদ্ধির স্বার্থে। এই স্কিম পরিচালিত করতে ১৯৮১ সালে করা হয় 'ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বিধি। সেই থেকে ওই বিধির আওতায় তা পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে নাম ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বিধি হলেও বাস্তবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বলতে কোনো ব্যাংক নেই দেশে। আবার পুরো বিষয়টি দেখভালও করে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, ডাক অধিদপ্তর নয়।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সাধারণ হিসাব ও মেয়াদি হিসাব মিলিয়ে পুঞ্জীভূত দায় ৩৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে মেয়াদি হিসাবেই বেশি অর্থাৎ ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। আর সাধারণ হিসাবে ২ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা।

অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুটি হিসাব মিলিয়ে আমানত হয়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। তবে মুনাফার হার ভালো হওয়ার কারণে সঞ্চয়পত্রের তুলনায় এ স্কিমের প্রতি দিন দিন মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। আর এটিই হচ্ছে সরকারের চিন্তার কারণ। এই স্কিমে যত বেশি টাকা রাখবে মানুষ, তত বেশি সুদ গুনতে হবে সরকারকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে চালুর পর থেকে স্কিমের আওতায় মেয়াদি আমানতের মুনাফার হার ১৬ বার পরিবর্তন করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে শুরুর বছর এ আমানতে মুনাফার হার ছিল ১০ শতাংশ। মাঝখানে ১৯৮৮-১৯৯২ সময়ে তা ১৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্তও ছিল। তবে বিনিয়োগসীমায় সরকার তেমন হাত দেয়নি।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'সার্বিকভাবে সিদ্ধান্তটি ইতিবাচকই হয়েছে। কারণ, সঞ্চয়পত্রে অনলাইন পদ্ধতি চালু করায় অনেক টাকাওয়ালা এ স্কিমে বিনিয়োগ বাড়িয়ে দিয়েছে। ভালো দিক যে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এই স্কিমে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগসীমা রাখা হয়েছে। আরও ভালো হতো যদি সঞ্চয়পত্রেও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। এতে সরকারের সুদ ব্যয় কমত।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036499500274658