ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার প্রচেষ্টা চলছে- রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এমন তথ্য জানান বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের নেতারা। এ লক্ষ্যে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিভিন্ন আন্দোলনের মঞ্চের সংগঠক ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য গতকাল বিকেলে ঢাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মুনীর চৌধুরী মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। কিন্তু আলোচনা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই টিএসসি-ভিত্তিক ২১টি সংগঠন সভা বর্জন করে বেরিয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে শুরুতেই ভেস্তে গেল বামপন্থিদের বৃহত্তর ঐক্য গড়ার প্রয়াস।
এর আগে গতকাল দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সমন্বয়ক ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল কবীর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঐক্যের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিফ অনীক, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডাকসু নির্বাচন ঘিরে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। এ লক্ষ্যে ১১ দফা ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর সঙ্গে একমত পোষণকারীদের সবাইকে নিয়ে বামপন্থি মোর্চার প্যানেল সাজানো হবে। বিকেলে এ নিয়ে আয়োজিত মতবিনিয় সভার প্রসঙ্গও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, বামপন্থি সংগঠনের আমন্ত্রণে গতকাল বিকেলের সভায় যোগ দেন টিএসসি ভিত্তিক ২১টি সংগঠনের পাশাপাশি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী- ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ, চায়ের কাপে ডাকসুসহ ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে সভা বর্জন করেন টিএসসিভিত্তিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, সভার শুরুতে লিটন নন্দী জোটের ১১ দফা তুলে ধরেন। এ পর্যায়ে আহ্বায়ক হাসান আল মামুন ও যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হকসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ১০-১২ জন নেতা সভায় যোগ দিতে আসেন। তারা মিলনায়তনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে এর প্রতিবাদ জানান ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি এস এম রাকিব সিরাজী। পরে তাঁর নেতৃত্বে টিএসসির সংগঠনগুলো সভা বর্জন করে।
এ প্রসঙ্গে রাকিব সিরাজী বলেন, তাদের অজ্ঞাতসারে ক্যাম্পাসের বাইরের এবং বিতর্কিত সংগঠনকে সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর প্রতিবাদে তারা সভা বর্জন করেছেন।
যদিও ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীর দাবি, বহিরাগত কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কারা সভায় অংশ নেবেন তা আমন্ত্রণপত্রে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল। টিএসসির সংগঠন বাদে বাকিরা ১১ দফার সঙ্গে একমত জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন লিটন।
তবে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরু জানান, বামপন্থিদের ১১ দফার সঙ্গে একমত হলেও জোটগতভাবে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে আবাসিক হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র নেওয়াসহ অভিন্ন দাবিগুলো নিয়ে বামপন্থিদের সঙ্গে জোটগত আন্দোলন করবেন বলে জানান নুরু।