মোট ভোটারের চেয়ে বেশি ভোট পড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষণার ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় মানবজমিনের খুলনার স্টাফ রিপোর্টার মো. রাশিদুল ইসলামকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, চার সপ্তাহ পর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আগাম জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মহীউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে সোমবার (২১ জানুয়ারি) জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গত ৩০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় খুলনার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হেলাল হোসেন খুলনা-১ আসনের (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) বেসরকারি ফলাফলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পঞ্চানন বিশ্বাস ২,৫৩,৬৬৯ ভোট এবং ধানের শীষের প্রার্থী আমীর এজাজ খান ২৮,১৭৭ ভোট পেয়েছেন বলে ঘোষণা দেন, যা মোট ভোটারের চেয়ে ২২,৪১৯ ভোট বেশি ছিল।
পরে রাতেই রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল সংশোধন করে ঘোষণা দেন নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ১৫২। ধানের শীষ পেয়েছে ২৮ হাজার ৩২২। তার এই সংশোধনের আগেই মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলা ট্রিবিউন ও সময় টিভিসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রথমবার ঘোষিত ফল প্রকাশ করে। পরদিন মানবজমিনে রিটার্নিং কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ফলাফল প্রকাশ হয়েছিল।
এ ঘটনায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বাদী হয়ে বাংলা ট্রিবিউনের খুলনা প্রতিনিধি হেদায়েত হোসেন মোল্লা ও মানবজমিনের খুলনার স্টাফ রিপোর্টার মো. রাশিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
মামলার পর হেদায়েত হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করা হলে তিনি খুলনার আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন। তখন বেশি ভোট পড়ার অডিও-ভিডিও এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা দেশে ও বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। এই মামলায়ই আগাম জামিন পেলেন মো. রাশিদুল ইসলাম। তিনি ন্যাশনাল নিউজ পেপার রিপোর্টার্স ফোরাম খুলনার সভাপতি ও খুলনা প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি।