ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস ঝুঁকিপূর্ণ, সংস্কারের উদ্যোগ নেই - দৈনিকশিক্ষা

ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস ঝুঁকিপূর্ণ, সংস্কারের উদ্যোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক |

খুলে পড়ছে রুম ও ছাদের পলেস্তারা। শিক্ষার্থীদের বিছানায় পড়ে আছে ইট-বালুর আস্তর। পলেস্তারা খুলে বের হয়ে আছে বিম ও ছাদের রড। ছাদের পানি এসে জমছে ফ্লোরে। অনেক রুমের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। দীর্ঘদিন ধরে রং না করায় দেয়ালে পড়েছে শেওলা। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা দেয়ালে লাগিয়েছে রঙিন পেপার ও পত্রিকার কাগজ। এমন চিত্র ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসগুলোর। অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন ছাত্ররা। যা স্বীকার করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ। এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে পাঠাগার। যার ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পড়ায় ব্যস্ত থাকবেন ছাত্ররা। এসব কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আটটি হলে তিন হাজার শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও তার বিপরীতে থাকে প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থী। নিজ নিজ বিভাগের মাধ্যমে হলে উঠার নিয়ম থাকলে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনগুলোর মাধ্যমে হলে উঠতে হয়। ছাত্রাবাসগুলোতে খাবার সরবরাহ করা হয় অত্যন্ত নিুমানের। যার ফলে অনেকেই ব্যবহার করছেন বৈদ্যুতিক হিটার (চুলা)। ৮ জন থাকার রুমের বিপরীতে থাকে ১৬ জন। উত্তর ছাত্রাবাসের ১২ জনের বিপরীতে থাকে ২৫ জন।

ঢাকা কলেজ অধ্যয়ন করতে আসা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আটটি ছাত্রাবাস। আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস, পশ্চিম ছাত্রাবাস, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস, শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রাবাস, দক্ষিণ ছাত্রাবাস, উত্তর ছাত্রাবাস, দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস ও শেখ কামাল ছাত্রাবাস। কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন চালু হয়েছিল উত্তর ছাত্রাবাস ও দক্ষিণ ছাত্রাবাস যা এখন জরাজীর্ণ।

শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রাবাস ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে চালু হলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্কার করা হয়নি। নিচতলার জানালার সবগুলো গ্লাস ভাঙা, ডাইনিংয়ের অবস্থা খুবই নাজুক। বিদ্যুতের সার্কিট ব্রেকার পরিষ্কার না করায় এর ভেতরে হয়েছে পাখির বাসা, যা থেকেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২০৩ নম্বর রুমের স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। ছাদের দেয়াল ঘেমে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে পানি। ২০১নং রুমের ছাদে ধরেছে ফাটল। বর্ষাকালে দিনে রাতে ঘুমাতে পারে না ছাত্ররা। শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রবাসের হল প্রভোস্ট সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, হলের কিছু রুমে পানি পড়ে। সেগুলো আমি কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানিয়েছি। ঠিক করে দেয়া হবে। কিছুদিনের মধ্যে সংস্কার কাজ ধরা হবে।

দক্ষিণ ছাত্রাবাসের অনেক রুমে সামান্য বৃষ্টি হলে জমে থাকে পানি। অনেক জায়গায় দেখা যায় ছাদ ও বিমের রড। টিভি রুমে বসার জন্য নেই পর্যাপ্ত চেয়ার। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পুরো রুমে পড়ে আছে কাগজের ময়লা-আবর্জনা।

হলের ২০৬নং রুমের অনার্সের ছাত্র মিরাজ হোসেন বলেন, হলে একদিকে থাকার সমস্যা। বেশি বৃষ্টি হলে রাতের বেলায় ফ্লোরিং কক্ষে ঘুমানো যায় না। শুরুতে হলের খাবার ২০ টাকা থাকলেও তা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা। কিন্তু খাবারের কোনো মান বাড়েনি।

আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসটি নামে আন্তর্জাতিক হলেও বাস্তবে বসবাস দেশি শিক্ষার্থীদের। হলে প্রবেশ করে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। রিডিং রুমের পলেস্তারা পড়ে বের হয়ে আছে রড, তার মধ্যেও করা হচ্ছে সংস্কার।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাসে তেমন সমস্যা না থাকলেও কিছু জায়গায় দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল। প্রবেশমুখে গ্রিলের সামনের অংশে ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা থেকে সৃষ্টি হচ্ছে মশা। ডাইনিংয়ের পাশেই বাথরুমের ময়লার ড্রেন খোলা, যা থেকে বের হচ্ছে দুর্গন্ধ। উত্তর ছাত্রাবাসে অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল। পলেস্তারা খুলে বের হয়ে আছে বিম ও ছাদের রড। বারান্দার অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল। খুলে পড়ছে পলেস্তারা। সিমেন্ট দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে শহীদ নজরুল ইসলাম স্মৃতি পাঠাগার।

ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ মো. মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লা বলেন, কয়েকটা হল খুব ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি

দিয়ে বলেছি যে, ছাত্রাবাসগুলো বসবাসের অনুপযোগী। যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। সম্প্রতি আরও একটি চিঠি দিয়েছি। তিনি বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার কে নেবে? পরে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি দিয়েও কোনো জবাব পাইনি। হলে যারা থাকে কেউ নিয়মিত হল ফি পরিশোধ করে না। নিয়মিত ফি পরিশোধ করলে আমরা নিজেরাই কিছু সংস্কার করতে পারতাম।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.026281833648682