ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রলীগ এবং একই সময়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্রদলের নেতাকমীরা পৃথক মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
মানববন্ধনে ছাত্রলীগের বহনকৃত ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ধর্ষণ করতে বর্জন, ঢাবি করো গর্জন’, ‘স্বাধীন দেশে আর কত?’, ‘আমি বাংলাদেশ, আমি লজ্জিত’, ‘বাঙালি অভিধানে আর থাকবে না ধর্ষণ’ ইত্যাদি। কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এসময় ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তারা।
অপরদিকে, মানববন্ধনের আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ছাত্রদলের নেতকার্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। কর্মসূচি থেকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের র দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে যে স্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তা এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ওই ছাত্রী রোববার রাতে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এখন ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া ঘটনায় জড়িত কাউকে আটকও করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে সবাই গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। যে স্থানে ঘটনাটি ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জায়গাটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ওসি স্যার ঢাকা মেডিকেলে গেছেন। তিনি নিজে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। আশা করি দ্রুতই আমরা জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী জানিয়েছেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল হাই জানান, ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বর্তমানে ঢামেকের ওএসসিসিতে চিকিৎসাধীন।
ঢাবি রোকেয়া হলের ওই শিক্ষার্থী প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। ওই ছাত্রীর বয়স ২০ থেকে ২২-এর মধ্যে বলে জানা গেছে। ধর্ষণের সময় তাকে মারধরও করা হয়। তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী জানিয়েছেন, কুর্মিটোলা এলাকায় নামার পর অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন তাঁর মুখ চেপে ধরে। এ সময় তাকে মারধরও করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায়ই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়।
পরে রাত ১০টার দিকে চেতনা ফেরার পর তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। বান্ধবীকে ঘটনা জানান। এরপর সহপাঠীরা তাঁকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেয়া হয়।