ঢাবি প্রশ্নফাঁস চক্রের অর্ধশতাধিক সদস্য শনাক্ত - Dainikshiksha

দেড় থেকে ৬ লাখ টাকায় প্রশ্ন ফাঁসঢাবি প্রশ্নফাঁস চক্রের অর্ধশতাধিক সদস্য শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস চক্রের অর্ধশতাধিক সদস্যকে শনাক্ত করেছে। এরই মধ্যে চক্রের হোতাসহ ৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩৭ জন বিভিন্ন সময়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে জানা গেছে, দেড় থেকে ছয় লাখ টাকায় প্রশ্ন ফাঁস করছে চক্রটি।

সিআইডি জানিয়েছে, এদের মধ্যে রয়েছে ছাত্রনেতা ও প্রেস কর্মচারীসহ রাজধানীর বিভিন্ন নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পর্যন্ত। ছাপাখানা থেকে ভর্তি পরীক্ষার হল সবখানেই সক্রিয় তারা। পাশাপাশি প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে সুযোগ পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকেও চিহ্নিত করেছে তারা।

২০১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় শাহবাগ থানায় করা মামলা তদন্তে নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে সিআইডি। এরই মধ্যে সংস্থার সদস্যরা চক্রের মূল হোতাসহ ৩৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের ৩৭ জন বিভিন্ন সময়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

শাহবাগ থানায় ওই মামলাটি হয়েছিল (নম্বর ২৬, ২০ অক্টোবর) তথ্যপ্রযুক্তি ও পাবলিক পরীক্ষা অ্যাক্টে। সিআইডির পরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম মামলাটি করেন। এতে এজাহারভুক্ত আসামি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন রানা, আবদুল আল মামুনসহ তিনজন। পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডিকে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হবে। 

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, দুই প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস করে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। একটি হচ্ছে মূল প্রশ্নটিই ফাঁস করা হয়। প্রেস কর্মচারী, প্রশ্ন পরিবহন, পরীক্ষার কেন্দ্র ও বিতরণের সময় তা সরাসরি তাদের হাতে পৌঁছে।

সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্তদের কেউ কেউ এটি করে থাকে। আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে। ভুয়া (ডামি) পরীক্ষার্থী পাঠিয়ে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে হলে বসে বাইরে প্রশ্ন বলে দেয়।

বাইরে থাকা বিশেষজ্ঞ টিম দ্রুত প্রশ্ন সমাধান করে এ ডিভাইসের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের সমাধান বলে দেয়। এছাড়া প্রশ্ন বিতরণের সময় মোবাইল ফোনে দ্রুত ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুর, সাইফুল ও মিনহাজ সরাসরি মূল প্রশ্ন ফাঁস করত। চক্রের অলিভ, ইব্রাহিম, বাধন, মুস্তফা, রাকিবুল হাসান, ইছামি, বনি মারুফ, তনয় প্রশ্ন ফাঁস করত ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে। এছাড়া রাজধানীর অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি শিক্ষক বাবুল ও ধানমণ্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজের শিক্ষক হোসনে আরা প্রশ্নের ছবি তুলে বাইরে পাঠাত।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, চক্রের সদস্যরা ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। চক্রে ৫০ জনের বেশি সক্রিয় সদস্য কাজ করছে। গ্রেফতার না হওয়া ব্যক্তিদেরও শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া জালিয়াত চক্রের মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে ঢাবিতে চান্স পাওয়া কয়েকজন ছাত্রকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। কর্মকর্তারা আরও জানান, প্রেস কর্মকর্তা খান বাহাদুর ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁস করত। চক্রের অন্য সদস্যরা সেই প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করত দেড় থেকে ছয় লাখ টাকায়।

প্রশ্নফাঁস বন্ধে সিআইডির সুপারিশ : সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু আইন প্রয়োগ করে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা সম্ভব নয়। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি কেন্দ্রের সংখ্যা কমিয়ে আনা, আসন সংখ্যার বিপরীতে প্রাথমিক বাছাইয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী নির্ধারণ করাসহ পুরো প্রক্রিয়াকে নজরদারির মধ্যে আনতে হবে। কর্মকর্তারা বলেন, প্রশ্ন তৈরি থেকে ছাপা ও পরীক্ষার্থীদের হাত পর্যন্ত আসতে অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। যে কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশ্ন ফাঁস করতে পারে। তাই পুরো প্রক্রিয়া নজরদারির মধ্যে আনতে হবে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039448738098145