ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষককে আটক করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘একজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরবর্তীতে জানানো হবে।
আটক ব্যক্তি ধর্ষক বা এ ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব আটক করে সদর দপ্তরে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাব নিশ্চিত হয়-ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে ওই যুবক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে র্যাব বুধবার সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।।
সূত্রটি জানায়, আইন-শৃঙ্খলার কয়েকটি বাহিনী একজনকে চিহ্নিত করে তার পরিচয় ও অবস্থান নির্ণয় করেছে। ওই ব্যক্তির প্রতিটি পদক্ষেপ এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নখদর্পণে। প্রমাণ মিললেই তাকে যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে।
তবে কীভাবে ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ওই ব্যক্তির জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ধারণা করা হচ্ছে যে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
এর আগে মঙ্গলবার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করা হবে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কুর্মিটোলায় সড়কের পাশে ঘটনাস্থলের কাছের দুটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করা হবে।
এছাড়াও ভুক্তোভোগী ছাত্রীর বিবরণী ও তার মুখে শুনে স্কেচ এঁকে ধর্ষণকারীকে চিহ্নিত করা হচ্ছে বলেও জানা যায়।
মঙ্গলবার ডিবির উত্তরের উর্ধতন কর্মকর্তা ও ডিএমপির গুলশান বিভাগের ডিসি পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারেও (ওসিসি) ছাত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছেন।
মামলার তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানান, ধর্ষণের শিকার ঢাবি ছাত্রীর মুখে বিবরণ শুনে অপরাধী শনাক্তের কাজ করছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে ছাত্রীর বর্ণনা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে।
এছাড়া মঙ্গলবার পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে ম্যাপ এঁকেছেন। তরুণী কোন দিক থেকে এসেছেন, তার সামনে পেছনে কারা ছিল, সম্ভাব্য কোন স্থান থেকে মুখ চেপে তাকে তুলে নেয়া হয়েছে সেসব বিষয়ে ধারণা নিয়েছেন।
ক্যান্টনমেন্ট থানায় দায়েরকৃত মামলাটি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত ক্লাস শেষে ক্যাম্পাস থেকে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার পথে রোববার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন। গভীর রাতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন। এরপর সোমবার সকালে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে যাওয়ার পথে একটি ঝোপের মধ্য থেকে ভিকটিমের বই, ঘড়ি, ইনহেলার ও চাবির রিংসহ বেশ কিছু আলামত পাওয়া যায়।
ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. ডা. সোহেল মাহমুদ।