ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করতে পাল্টাপাল্টি বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) ছাত্রলীগ মনোনীত সম্মিলিত শিক্ষার্থী পরিষদের সদস্য মো. তানভীর হাসান সৈকত ও নজরুল ইসলামের বিজ্ঞপ্তি দেয়ার দুই দিনের মাথায় এজিএস সাদ্দাম হোসেন ও ছাত্র পরিবহন বিষয়ক সম্পাদক শামস-ঈ নোমান নতুন করে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি দেন। দুটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার (৭ মার্চ) ক্যাম্পাসের রিকশা ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে ডাকসুর প্যাডে প্রকাশিত ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান সৈকত ও নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা ক্যাম্পাসে পরিবহন শৃঙ্খলা ও ভাড়া নির্ধারণ। অনেক আশা-হতাশার মধ্যে এই সমস্যা সমাধানের দীর্ঘদিনের দাবি শিক্ষার্থীদের। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ডাকসুর পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে যানবাহন শৃংখলা ও ভাড়া নির্ধারণ করা হবে এবং আগামী ১৫ই মার্চ থেকে নতুন নির্ধারিত ভাড়া কার্যকর হবে।
দুই সদস্য স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২ দিনের মধ্যে গতকাল (৯ মার্চ) ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন ও ছাত্র পরিবহন সম্পাদক শামস-ঈ নোমান স্বাক্ষরিত আরেকটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এ বিবৃতিতে আগামী ১২ তারিখ মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডাকসু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রিকশা ভাড়া নির্ধারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রিকশা ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে ঢাবির সকল শিক্ষার্থীর মতামত প্রত্যাশা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। সে লক্ষ্যে ছাত্র সংসদ আগামী ১২ই মার্চ দুপুর ২টায় ডাকসু ভবনে একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করতে যাচ্ছে। উক্ত মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে ঢাবির সকল শিক্ষার্থীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছে ছাত্র সংসদ। উক্ত মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকলের মতামতের ভিত্তিতেই ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের চূড়ান্ত রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।’
আলোচনার মাধ্যমে রিকশা ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে ডাকসুর সদস্য মো. তানভীর হাসান সৈকত বলেন, এর আগে ছাত্র পরিবহন সম্পাদক দুইবার মতবিনিময় সভা করেছে। সভা শেষে তিনি কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন নি, এমনকি সিদ্ধান্তও নিতে পারে নি। এরপর দীর্ঘদিন ধরে তার কোন কাজও আমরা দেখিনি। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কাজটি করতে উদ্যোগ নেই।
বিষয়টি অন্যভাবে দেখছেন ডাকসুর পরিবহন সম্পাদক শামস-ই-নোমান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছি। আমরা ৮ মাস ধরে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে স্টাডি করেছি। নগর পরিকল্পনাবিদ ও পারদর্শীদেরে সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের আলোচনা সভা কোনোভাবেই সদস্যদের বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। কষ্ট হলেও আমরা একটা করবো। এর আগে দুইবার আলোচনা সভা করেছিলেন এখন আবার কেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেন নি তিনি।
এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, পরিবহন বিষয়ের কাজ করে ছাত্র পরিবহন বিষয়ক সম্পাদক। রিকশার ভাড়া নিধারণের কাজটা তার। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই। যদিও কোন সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি হয়েছে। তারা যদি করতে চায় তাহলে আমি সমন্বয় করে দেবো। সমন্বয়ের কাজ ভিপি-জিএস নাকি এজিএসের কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সে প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারবোন না।
তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্ট করে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করেছি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই ডাকসু এজিএস ও পরিবহন সম্পাদক একটি আলোচনা সভার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমাদের এ কাজের কৃতিত্ব নিতে চান। আমরা তাদের অনেক সময় দিয়েছি, তারা আমাদের কথার কর্ণপাত করেননি। যখন আমরা প্রক্টর, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত করেছি, তখন তারা এখানে আলোচনা সভার ডাক দিয়েছেন।