যথাযোগ্য মর্যাদায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার (৯ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী ‘রোকেয়া দিবস-২০১৮’ উদযপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল মিলনায়তনে ‘রোকেয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন বক্তৃতা, স্বর্ণপদক ও বৃত্তি প্রদান’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশন বক্তৃতা প্রদান করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।
রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রোকেয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও হলের খণ্ডকালীন আবাসিক শিক্ষক মনিরা বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন হলের খণ্ডকালীন আবাসিক শিক্ষক ড. রুমানা ইসলাম।
জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ‘বেগম রোকেয়া ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক ফাউন্ডেশন বক্তৃতায় বেগম রোকেয়ার জীবনের বিভিন্ন দিক আলোকপাত করে বলেন, বাংলাদেশের নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া আজীবন মেয়েদের শিক্ষা বিস্তারের জন্য প্রয়াস চালিয়ে গেছেন। তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালি মুসলমান মেয়েদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য। বেগম রোকেয়ার মাতৃভূমি বাংলাদেশ, সে বাংলাদেশে একুশ শতকে নারীর যে অবস্থান তা বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই বেগম রোকেয়ার ওপর অসাধারণ প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য ফাউন্ডেশন বক্তা জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বেগম রোকেয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বেগম রোকেয়া ৫৩ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে বহু প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেছেন। তিনি জীবনে চলার পথে নারীদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছেন এবং তা থেকে উত্তরণের পথ দেখিয়েছেন। তাঁর ‘পদ্মরাগ’ উপন্যাসে তিনি সমাজচিত্র অঙ্কন করেছেন। তাঁর প্রবন্ধগুলো পর্যালোচনার মাধ্যমে তাঁকে মূল্যায়ন করা সম্ভব। বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার দর্শন আমাদের জীবনের জন্য প্রাসঙ্গিক।
পরে উপাচার্য রোকেয়া হলের মেধাবী ছাত্রীদের মাঝে স্বর্ণপদক ও বৃত্তি প্রদান করেন। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে হলের স্বর্ণপদক পেয়েছেন হালিমা আক্তার (এম. ফার্ম, ফার্মেসী বিভাগ)। মেধাবৃত্তি লাভ করেছেন প্রিয়াংকা সুলতানা হেমা (এম.এস.এস, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ), সুস্মিতা সাহা (এম.এ, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ), নাবিলা নাওয়ার বিন্তি (এম. এস, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ), উম্মে খাদিজা পিয়াল (এম.এস, দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ)। সাধারণ বৃত্তি পেয়েছেন- আক্সা হোসেন নিঝুম (১ম বর্ষ, অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ), মনিরা চৌধুরী মিলা (১ম বর্ষ, অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ), কানিজ ফাতেমা (২য় বর্ষ, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগ) ও রাজিয়া সুলতানা বিথী (৩য় বর্ষ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ) এবং কল্যাণ বৃত্তি পেয়েছেন হরিপ্রিয়া রানী (১ম বর্ষ, সংস্কৃত বিভাগ)।