ঢাবিতে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত - দৈনিকশিক্ষা

ঢাবিতে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শৈশব থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছেন। সাফল্যও এসেছে। সুযোগ পেয়েছেন দেশের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠে পড়ার। কিন্তু পঞ্চগড়ের আসমা খাতুন এবং চাঁদপুরের মো. সিয়ামের আশৈশব ইচ্ছা ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে অর্থাভাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং পরের কয়েক বছর পড়ার খরচ জোগানোই এখন তাঁদের মূল চিন্তা। শনিবার (২৬ অক্টোবর) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে আরও জানা যায়-

দুশ্চিন্তায় আসমা

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের লোহাকাচি এলাকায় বেড়ে ওঠেন আসমা খাতুন। বাবা শাহ আলম দরজির কাজ করে কোনোমতে সংসার চালাতেন। আড়াই বছর আগে মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচারের কারণে এখন তা-ও পারছেন না। মা রোকেয়া পারভীনকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। নিজেদের এক বিঘা জমিতে আবাদ করে কোনোরকমে চলছেন। পরিবারের এই অবস্থায় গ্রামের ছেলেমেয়েদের পড়িয়ে নিজের পড়ালেখার খরচ জোগাতেন আসমা খাতুন। এভাবে সংগ্রাম করে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন তিনি। ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় হয়েছেন ৩৬৮তম। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন এই মেধাবী।

তিন বোন, দুই ভাইয়ের মধ্যে আসমা তৃতীয়। বড় বোন শাহনাজ পারভীনের বিয়ে হয়ে গেছে। মেজ বোন শারমীন আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। একটি ব্যাংকের বৃত্তি আর আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় তাঁর পড়ালেখা চলছে। ছোট যমজ ভাই রাকিব হাসান ও রাশিদ হাসান এবার জেএসসি পরীক্ষার্থী।

আসমা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তিনি বলেন, কলেজে পড়া অবস্থায় বাড়ি থেকে কলেজে যেতে প্রতিদিন ৩০ টাকা করে ভাড়া লাগত। সেই টাকা বাড়ি থেকে দিতে না পারায় কলেজে নিয়মিত যেতে পারেননি তিনি। সপ্তাহে এক দিন বা দুই দিন যেতেন। তবে শিক্ষকেরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। বই কিনতে না পারায় শিক্ষকেরা ও কলেজের বড় বোনেরা বই দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।

আসমা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশের পরমুহূর্তে মনে দুশ্চিন্তা ভর করেছে—ভর্তির খরচ আর পরবর্তী সময়ে পড়ালেখার খরচ কীভাবে চলবে।

ভর্তি অনিশ্চিত সিয়ামের

‘খ’ ইউনিটের মেধাতালিকায় ৭৮৯তম স্থান অর্জন করেছেন মো. সিয়াম। সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া শেষে আগামী নভেম্বরে ভর্তি হতে হবে তাঁকে। কিন্তু অর্থাভাবে সেখানে ভর্তি হতে পারবেন কি না, কিংবা ভর্তি হলেও লেখাপড়া চালাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় তিনি।

সিয়ামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মতলব পৌরসভার চরনিলক্ষ্মী গ্রামে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সিয়াম মেজ। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪ দশমিক ৫০ পেয়েছেন। এইচএসসির ফলাফল মনঃপূত না হলেও একাগ্রতার কারণে সুযোগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সিয়ামের বাবা মনির হোসেন বর্গাচাষি। নিজের জমিজমা নেই। চাষবাস করে যা পান, তা দিয়ে কোনোরকমে চলে সংসার। অভাব-অনটন লেগেই আছে সংসারে। শৈশব থেকেই অভাব-অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠেন। তাঁর বড় ভাই স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট ভাইয়ের বয়স তিন বছর।

কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বাবার কাজে সহযোগিতা করার পাশাপাশি কয়েকটি টিউশনি করতেন সিয়াম। ওই টাকায় বই-খাতা-কলম কিনতেন এবং কলেজের বেতন, পরীক্ষার ফিসহ অন্যান্য খরচ মেটাতেন। সিয়াম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় প্রাথমিক আশা পূরণ হয়েছে। আশা করছেন, ভালো একটি বিষয় নিয়ে পড়তে পারবেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের যে আর্থিক অবস্থা, তাতে টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আদৌ ভর্তি হতে পারবেন কি না, তা অনিশ্চিত। এমনকি ভর্তি হওয়ার পরও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়াও কঠিন হবে।

মনির হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলেডার বড় ইচ্ছা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়নের। হেনো চান্সও পাইলো। হুনলাম, হেনো ভর্তি অইতে ভালা টেয়া লাগে। সংসারের খরচই যোগাইতে পারি না। ছেলেরে ভর্তি করামু ক্যামনে?’

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059349536895752