ঢাবির অধিভুক্ত ৭ কলেজে বড় সমস্যা পরীক্ষার ফলে দেরি - Dainikshiksha

ঢাবির অধিভুক্ত ৭ কলেজে বড় সমস্যা পরীক্ষার ফলে দেরি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার আড়াই বছর পরও রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের সংকট কাটেনি। এখনো এসব কলেজের ফল প্রকাশে 

দেরি হচ্ছে। শিক্ষাপঞ্জিও ঘোষণা করা হয়নি। এ অবস্থায় আবার আন্দোলন শুরু করেছেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৮ জুলাই) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মোশতাক আহমেদ।

এবার শিক্ষার্থীদের দাবি পাঁচটি। এর মধ্যে রয়েছে সেশনজট নিরসনে শিক্ষাপঞ্জি দ্রুত চালু, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ, এর আগে প্রকাশ হওয়া কয়েকটি পরীক্ষার ফলাফলে ‘গণহারে’ অকৃতকার্য হওয়ার কারণ উল্লেখসহ খাতা পুনর্মূল্যায়ন, সাত কলেজ পরিচালনায় স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন স্থাপন ও সিলেবাস অনুযায়ী প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ সাত কলেজের শিক্ষকদের দিয়েই উত্তরপত্র মূল্যায়ন। এর আগেও একাধিকবার এসব দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ দুই দিক দিয়েই স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতক পাস (ডিগ্রি) কোর্সের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছেন। যেমন স্নাতকে (সম্মান) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে সাত মাস আগে। কিন্তু এখনো ফল প্রকাশিত হয়নি। অথচ এসব শিক্ষার্থীর দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা আগামী নভেম্বরে নেওয়ার কথা হচ্ছে।

২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একজন ছাত্র প্রথম আলোকে জানান, স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে। এখনো ফল প্রকাশিত হয়নি। চার বছরের স্নাতক (সম্মান) কোর্স শেষ হতে সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি লাগছে।

স্নাতক পাস কোর্সের শিক্ষার্থীরা আরও পিছিয়ে আছেন। যেমন ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া স্নাতক পাস কোর্সের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের এখন মাত্র বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এক বছরের কোর্স শেষ হতে লাগছে প্রায় আড়াই বছর।

২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে সাত মাস আগে এখনো ফল প্রকাশিত হয়নি
এসব শিক্ষার্থীর দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা আগামী নভেম্বরে নেওয়ার কথা হচ্ছে

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতে ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। ওই সময় এসব কলেজে শিক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৬৭ হাজারের মতো। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া হচ্ছে না। ফল প্রকাশেও দেরি হচ্ছে।

অধিভুক্ত সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও ফলাফলের তথ্য তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা বলেছেন, তাঁরা সবার চেয়ে পিছিয়ে আছেন। যেমন ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা প্রায় পাঁচ মাস আগে হলেও এখনো ফল প্রকাশিত হয়নি। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একই শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের ফল প্রকাশিত হয়ে গেছে। এমনকি তাঁদের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) পরীক্ষার ফরম পূরণেরও প্রস্তুতি চলছে। আর একই শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে আরও প্রায় চার মাস আগে।

অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশে কেন দেরি, তা জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরী বলেন, দ্রুত ফল প্রকাশের জন্য যা যা করার, তা-ই করা হচ্ছে। বিষয়টি উপাচার্য নিজেই তদারক করছেন।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার ঢাকা কলেজের সামনে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ (নীলক্ষেত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বার) পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছেন। এর আগে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সময় পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেলে চোখ হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান।

সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি (ফোকাল পয়েন্ট) কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাপঞ্জি তৈরি হয়ে গেছে। উপাচার্যের অনুমোদন পেলেই প্রকাশিত হবে। উত্তরপত্র সাত কলেজের শিক্ষকেরা মূলত দেখবেন। কিছুসংখ্যক উত্তরপত্র দেখবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। পরীক্ষার হল থেকেই উত্তরপত্র শিক্ষকদের কাছে পাঠানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা যাতে দ্রুত শেষ করা যায়, সে জন্য সাত কলেজের জন্য সাতটি আলাদা বোর্ড কাজ করবে। ডিগ্রি পাস কোর্সের যেসব শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা আটকে আছে, দ্রুত সেসব পরীক্ষা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান দেখা করেছেন। তখন প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেছেন অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নশীল হতে। সেশনজটের কারণে শিক্ষার্থীদের সময় যাতে নষ্ট না হয়। শিক্ষার মান বজায় রাখার পাশাপাশি যে উদ্দেশে সাতটি কলেজ অধিভুক্ত করা হয়েছিল, তা যেন ব্যাহত না হয়।

সাতটি কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, শুরু থেকেই পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ নিয়ে যে জটিলতা ছিল, তা এখনো পুরোপুরি দূর করা যায়নি। প্রথম দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্ব ছিল, যে কারণে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা হয়। এখনো কিছু তথ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়নি। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের কিছু শিক্ষক উত্তরপত্র মূল্যায়নে দেরি করেন। এ ছাড়া দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থীর ব্যবস্থাপনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জনবলেরও ঘাটতি আছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতা ও ঢাকা কলেজের ছাত্র এ কে এম আবু বকর বলেন, তাঁরা চান ঠিক সময়ে পরীক্ষা ও ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশ করা হোক।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.012820959091187