ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্র সংগঠনগুলোর দখলদারিত্বের অবসান এবং হল প্রশাসন প্রদত্ত বৈধ সিটের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, বৈধ সিট ন্যায্য অধিকার। প্রক্টর, ভিসি, শিক্ষকের চেয়ে রাজনৈতিক কর্মীর ভূমিকা বেশি পালন করেন। ঢাবিকে পুতুলে পরিণত করেছেন তারা। প্রক্টর, ভিসি সব কিছু দেখেও লেজুড়বৃত্তিতে নিয়োজিত। বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব দাবি করেন তারা। ‘বৈধ সিট আমার অধিকার’ ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আবরার হত্যাকাণ্ড বুয়েটের কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি পুরো বাংলাদেশের নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ। আবরার হত্যা, হাফিজ, আবু বক্কর হত্যারই প্রতিফলন। রাজনৈতিক প্রোগ্রামে জনবল পাবে না বলেই ছাত্রলীগ গেস্টরুম, গণরুম বন্ধ করতে চায় না।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইশরাতুল জাহান নিশি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি স্বাধীনচেতা মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠতে। কিন্তু সেই পরিবেশ আমরা পাচ্ছি না। একই সঙ্গে আমরা আমাদের অধিকার পাচ্ছি না। ভয়ে কথা বলতে পারি না। ব্যক্তি-স্বাধীনতায় কেন বাধাগ্রস্ত হব? বুয়েটে যদি ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে পারে তাহলে আমরা কেন আমাদের বৈধ অধিকারের সিট পাব না।’
ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাহজাহান তানিম বছরের শুরুতে তার হলে থাকার তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নাকি আমাদের ম্যানার শেখাবে। যারা হত্যা আর খুনের রাজনীতি করে বেড়ায়, যারা গুলি করে মানুষ মারে, যারা রড দিয়ে পিটিয়ে মানুষ মারে, যারা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে, তারা শেখাবে ম্যানার? তারা ম্যানারের নাম করে যা শেখাবে তা হচ্ছে কীভাবে মানুষ মারতে হয়, কীভাবে হত্যা করতে হয়। এসময় তিনি আবাসিক হলগুলোতে বৈধ সিট নিশ্চিতের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বৈধ সিট নিশ্চিত করতে ছয়টি দাবি জানান। তাদের দাবিগুলো হলো: প্রথম বর্ষ থেকে প্রশাসন কর্তৃক বৈধ সিট বরাদ্দ দেয়া, গেস্টরুম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা, অবৈধভাবে সিট দখলদারিদের অবিলম্বে হল ত্যাগে বাধ্য করা, রাজনৈতিক গণরুম বাতিল করা, সিট বরাদ্দে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, পলিটিক্যাল রুমের নামে রুম দখল বন্ধ করা।