তছনছ শিক্ষাব্যবস্থা, করোনায় সব ওলটপালট - দৈনিকশিক্ষা

তছনছ শিক্ষাব্যবস্থা, করোনায় সব ওলটপালট

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

দীর্ঘ এক যুগের চেষ্টায় দেশের পুরো ‘শিক্ষা ক্যালেন্ডারে’ ফিরে এসেছিল শৃঙ্খলা। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ক্যালেন্ডারে শৃঙ্খলা ফেরার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ শিক্ষায় সেশনজটও চলে এসেছিল সহনীয় মাত্রায়। তবে করোনার ছোবলে চার মাস ধরে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে এখন ওলটপালট পুরো শিক্ষা ক্যালেন্ডার, বিপর্যস্ত শিক্ষা কার্যক্রম।

শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কোটি কোটি মানুষের জীবন রক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাও করা যাচ্ছে না। ক্ষতি কিছুটা পুুষিয়ে নিতে হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠান কম বেশি ক্লাস নিলেও তাতে সঙ্কটের সমাধান হচ্ছে না। কবে হবে স্বাভাবিক ক্লাস, কবে উচ্চ মাধ্যমিকের ভর্তি, কবে হবে এইচএসসি পরীক্ষা কিংবা কবে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা? এমন উদ্বেগজনক প্রশ্ন এখন সামনে। শনিবার (১৮ জুলাই) জনকন্ঠের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিভাষ বাড়ৈ।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, একাডেমিক ক্যালেন্ডার থেকে একটি বছর হারিয়ে যাবে কিনা, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। একদিকে বাস্তবতার কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেমন এখনও এইচএসসি পরীক্ষার কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ বলতে পারছে না, তেমনি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কেও করোনা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তথ্য বলছে, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ছাড়া সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন টানা বন্ধের ঘটনা আর ঘটেনি। তবে করোনার কারণে শিক্ষার সঙ্কট এখন পৃথিবীজুড়েই। জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই বলেছে, এত বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ আগে কখনও হয়নি। এমনকি দুটি মহাযুদ্ধের সময়ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এই সঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

করোনায় প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছিল চীন। বাংলাদেশে প্রথম দফায় গত ১৭-৩১ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর এখন পর্যন্ত দফায় দফায় বন্ধের মেয়াদ বাড়ছে। এর মধ্যে ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষাসূচী স্থগিত করতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কোনমতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা গেলেও উত্তীর্ণদের কবে কলেজে ভর্তি করা যাবে তা বলা যাচ্ছে না।

এছাড়া শিক্ষার সবচেয়ে বড় অংশের যোগান দেয়া বেসরকারী খাতের পুরো শিক্ষা এখন মহাসঙ্কটে। অধিকাংশ উদ্যোক্তা, শিক্ষক ও কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই সরকারের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধার জন্য আবেদন করা হয়েছে। কেউ কেউ আবেদনের পর সংবাদ সম্মেলনেও দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন। শিশুদের কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারী স্কুল, কলেজ, থেকে শুরু করে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা সকলেই সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। সহায়তা চেয়েছেন ইংলিশ মিডিয়াম ও কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরাও।

দেশে করোনাকালে শিক্ষার সামনে আসা দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন উপাচার্যসহ দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা। করোনার ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য একটি জাতীয় শিক্ষা কমিটি গঠনেরও সুপারিশ করেছেন তারা। বেশ কিছু ত্রুটি নিয়ে চলা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের অনেক সমালোচনা থাকলেও এটাকে মন্দের ভাল বলছেন সকলেই।

এমন সঙ্কটে এর চেয়ে ভাল কোন পদক্ষেপ নেয়ার উপায় নেই বলেও স্বীকার করছেন সকলেই। দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগামীতে ছুটি কমানো, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, শিক্ষকদের ইনসেনটিভের ব্যবস্থা করে বিশেষ ক্লাস নেয়া, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর পাবলিক পরীক্ষা একমাস পিছিয়ে নেয়া, এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার একমাসের মধ্যে ফল প্রকাশ ও ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু এবং এসএসসি পরীক্ষা একমাস পিছিয়ে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।

পরীক্ষা সঙ্কটে, পরিস্থিতি উন্নতির অপেক্ষা 

এসএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষা শুরু হয় গত ৩ ফেব্রুয়ারি। শেষ হয় ২৭ ফেব্রুয়ারি। গত ১০/১২ বছর ধরে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের রেওয়াজ তৈরি হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে একমাস বিলম্বে গত ৩১ মে এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। বিলম্বে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হলেও একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। কবেনাগাদ তা শুরু হতে পারে সেটিও নিশ্চিত নয়।

এইচএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষাও ঝুলে গেছে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের রুটিন অনুযায়ী, গত ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে গত ৪ মে’র মধ্যে শেষ হওয়ার সূচী নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এই পরীক্ষাও ঝুলে রয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রমও পিছিয়ে গেল। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনও এখন বলতে পারছে না তারা শেষ পর্যন্ত কতটুকু কি করতে পারবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়। কারণ লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীকে ঝুঁকির মুখে ফেলা যাবে না। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর তপন কুমার সরকার বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা তো এমনিতেই স্থগিত করতে হয়েছে। কারণ ক্লাস শুরু হলে অন্তত এক সপ্তাহ এ পরীক্ষা নিয়ে আমাদের কাজ করে সময়সূচী তৈরি করতে হবে। এখনও এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আসেনি। আগে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হোক।

শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। তাই সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পরই স্কুল-কলেজে যাবে ছাত্রছাত্রীরা। যে সঙ্কট শুরু হয়েছে তাতে আমরা বলতে পারছি না যে কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তা জানলে সে হিসেবে ব্যবস্থা নিতাম।

তিনি আরও বলেন, অনিশ্চয়তা থাকায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠানো যাচ্ছে না। যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তবে টানা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেভাবে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে এটি চলমান থাকবে। ক্লাসের পরিসীমা বিস্তৃত করা হবে। আরও কীভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা যায় সেসব নিয়েও ভাবছি আমরা। এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে আমরা ভাবছি। তবে আগে পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা। আর কলেজ ভর্তি কার্যক্রম আমরা শীঘ্রই শুরু করতে পারব।

অনলাইনে স্কুল শিক্ষাতেই আপাতত গুরুত্ব

এই সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কিছু জটিলতা নিয়ে হলেও ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ নামে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে শ্রেণী পাঠদান কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর পরিচালিত এ কার্যক্রমে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও এটাকে মন্দের ভাল বলছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। মফস্বলের বহু এলাকায় সঙ্কট টিভি দেখতে না পাওয়ায়ও বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলছিলেন, তথ্য প্রযুক্তিখাতে যত অর্জন, যতটুকু আমরা এগিয়ে এসেছি পুরোটাই করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও এই রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি ছিল না, সবাইকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে হচ্ছে। আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে আমাদের অনলাইন এডুকেশন সিস্টেমে যেতেই হতো, সেখানে আমরা অনেক আগেই এই সঙ্কটকালীন সময়েই অনলাইন এডুকেশন চালু করতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, গত ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর ২৯ মার্চ থেকে সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের ক্লাস চালু করেছি। এছাড়াও অনলাইনে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন। আমরা দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জরিপ করে দেখেছি ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছতে পারছি।

বাকি শিক্ষার্থীদের জন্য যাদের কাছে অনলাইনে পৌঁছতে পারছি না তদের কাছে পৌঁছতে সব রকম চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষকদের অনলাইনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীদের যাতে শিক্ষা জীবন ব্যহত না হয়, তারা যেন ঝরে না পড়ে সেক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এদিকে পরীক্ষা নিতে না পালেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রেডিওতে প্রাথমিকের ক্লাস সম্প্রচারে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন। টেলিভিশনে ক্লাস প্রচার ও মোবাইল ফোনের বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর-৩৩৩৬ এ শিক্ষকের পরামর্শ কার্যক্রম গ্রহণের পর এবার রেডিওতে প্রাথমিকের ক্লাস সম্প্রচার শুরু হবে। বাংলাদেশ বেতার ছাড়াও দেশের সকল এফএম রেডিও স্টেশনে সম্প্রচার হবে ক্লাস। ইউনেস্কোর অর্থায়নে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস সম্প্রচারের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা সঙ্কটের কারণে সহসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে না; এমন চিন্তা থেকেই শিশুদের শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। পরীক্ষাও যেহেতু নেয়া যাচ্ছে না তাই শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে যে কোনভাবে যুক্ত রাখার চিন্তা থেকেই একের পর এক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

মহাপরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ শুক্রবার তাদের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সংসদ টেলিভিশনে এবার রেডিওতে প্রাথমিকের ক্লাস সম্প্রচার শুরু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারব। পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ সম্পর্কে মহাপরিচালক বলেন, আসলে প্রাণঘাতী এ করোনার মধ্যে ওভাবে পরীক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। একটি পরীক্ষা নিতে গেলে আবার বাধ্যতামূলক করার বিষয় আসে। এমনিতেই অনেক শিক্ষক শিশুদের পরীক্ষার মধ্যে রেখেছেন। অনেকেই সেই কাজ করছেন। একটা পরীক্ষা নেয়া, মূল্যায়ন করা আসলে ঠিকভাবে এই পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়।

সঙ্কটে শিক্ষার বড় অংশ বেসরকারী খাত

প্রাণঘাতী করোনায় দীর্ঘ বন্ধে আর্থিক সঙ্কটে পড়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা পেতে চায় দেশের বেসরকারী শিক্ষাখাতের প্রায় সকল সংগঠন, প্রতিষ্ঠান। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা ছাড়া বেসরকারী শিক্ষার সকল স্তরের পক্ষ থেকেই সহায়তার দাবি উঠেছে। শিক্ষার সবচেয়ে বড় অংশের যোগান দেয়া বেসরকারী খাতের অধিকাংশ উদ্যোক্তা, শিক্ষক ও কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই সরকারের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধার জন্য আবেদন করা হয়েছে। কেউ কেউ আবেদনের পর সংবাদ সম্মেলনেও দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন। শিশুদের কিন্ডার গার্টেনসহ বেসরকারী স্কুল, কলেজ, থেকে শুরু করে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা সকলেই সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। সহায়তা চেয়েছে ইংলিশ মিডিয়াম ও কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরাও।

শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরাও এ দাবিকে যৌক্তিক অভিহিত করে শিক্ষা খাতের বর্তমান আর্থিক সঙ্কট ও ভবিষ্যতের ঘনায়মান আর্থিক দুরবস্থা বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এজন্য প্রয়োজনে শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে পদক্ষেপ নেয়ারও সুপারিশ করে শিক্ষাবিদরা বলেছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্র্বল হয়ে পড়লে মালিকরা প্রতিষ্ঠান চালাতে গণহারে ছাঁটাই করবে। জনবল না কমালে তারাও চালাতে পারবে না। চাপ দিলেও ফল পাওয়া যাবে না। ফলে বেসরকারী শিক্ষা খাতে প্রণোদনা না দিলে শিক্ষা বিস্তার তো বটেই আরও অনেক ধরনের সঙ্কট তৈরি হবে। এখানে লাখ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী আছেন তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

আবার সামাজিক অবস্থার কারণে তারা করো কাছে সাহায্যও চাইতে পারবে না। এজন্য প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হলেও দেশের বড় বড় নামী বেসরকারী স্কুল ও কলেজকেও মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিষেজ্ঞরা। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানে অর্থেকেরই বেশি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত নন। তাদের বেতন ভাতা হয় প্রতিষ্ঠানের আয় থেকেই।

বেসরকারী স্কুল, কলেজের উদ্যোক্তারা বলছেন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে সম্প্রতি এক আদেশে টিউশন ফি আদায়ে চাপ প্রয়োগ না করতে তাদের নির্দেশ দিয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে বকেয়াসহ মাসিক বেতন আদায়ের কথা বলেছে। এমন অবস্থায় উভয়সঙ্কটে পড়েছেন তারা। কারণ তারা বেতনও চাইতে পারছেন না। বেশির ভাগ অভিভাবকও এ মুহূর্তে বেতন দিতে রাজি নন। আবার বেতন আদায় না করলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না। করোনার সঙ্কট আরও দীর্ঘায়িত হলে বিপদ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা উদ্যোক্তাদের।

দেশের বেসরকারী শিক্ষার কোন কোন ক্ষেত্রে মান ও বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সংখ্যাগত দিক চিন্তা করলেই করোনার এই ছোবলের মধ্যে সরকারী সহায়তার যৌক্তিকতা সামনে চলে আসে। শিক্ষার প্রতিটি স্তরেই বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণ ৯০ শতাংশের বেশি। কোন কোন স্তরে ৯৫ শতাংশেরও বেশি। কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার বেশিরভাগই বেসরকারী। সরকারী ও এমপিওভুক্ত বাদে এ খাতে ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে সাত হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা সম্পূর্ণই নিজস্ব আয়ে চলে। তারা টিউশন ফি নিতে না পারায় বেশ সঙ্কটে পড়েছে। পরিস্থিতি তুলে ধরে বাংলাদেশ বেসরকারী পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ও রাজধানীর শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ এম এম সাত্তার বলছিলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার একান্ত চেষ্টায় দেশের কারিগরি শিক্ষায় আজ যে অর্জন তা কিন্তু বেসরকারী স্তরেই। আজ যে সঙ্কটে পড়েছে এ খাত সেখানে যদি প্রণোদনা না দেয়া হয় তাহলে জননেত্রী শেখ হাসিনার এ অর্জন যেমন সঙ্কটে পড়বে তেমনি আর কতদিনে এ খাত দাঁড়াতে পারবে তাও ভাবা কঠিন। প্রণোদনা দিলে বেসরকারী বিশাল এ খাত একটু হলেও দাঁড়াতে পড়বে।

চরম সঙ্কটে পড়েছেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন। সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি)।

উচ্চ শিক্ষায় সেশনজটের শঙ্কা

মহামারীতে নতুন করে সেশনজটের আশঙ্কা এখন দেশের উচ্চ শিক্ষাস্তরের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর সামনে। হাতেগোনা কিছু পাবলিক ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে কম-বেশি ক্লাস নিলেও তাতে সঙ্কটের সমাধান হচ্ছে না। অনলাইনে ক্লাসের বাইরেই থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়। সঙ্কট সমাধানের কার্যকরি পথও খুঁজে পাচ্ছে না তারা। এমন অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন উপাচার্যসহ দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা। করোনার ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য একটি জাতীয় শিক্ষা কমিটি গঠনেরও সুপারিশ করেছেন তারা।

কিন্তু উচ্চ শিক্ষার সঙ্কট উত্তরণের উপায় কী? কি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে উচ্চ শিক্ষাস্তরে? জানা গেছে, দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের কথা মাথায় রেখেই ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ক্লাস পরিচালনার তাগিদা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।

তবে ইউজিসির আহ্বানের পরেও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় তার অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারছে না সফলভাবে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চলাচ্ছে। আবার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে একটি, বা দুটি বিভাগে সপ্তাহে একটি, দুটি ক্লাস নিচ্ছে। তবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অন্যন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে। প্রায় অর্ধশত সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় দাবি করে তারা কোন না কোন কার্যক্রম অনলাইনে চালাচ্ছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অনলাইনে অন্তত ক্লাস কার্যক্রম সফলভাবে চালিয়ে যাচ্ছে দেশের প্রথম ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (বিডিইউ) এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এর বাইরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নিলেও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সফলভাবে তা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তুলনামূলকভাবে বড় প্রতিষ্ঠান, জিডিটালাইজ না হওয়া এবং শিক্ষার্থীরা গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়ায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ কাজে সফল হতে পারছে না। তবে কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এ কাজে কম বেশি সফলতা দেখাচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সরকারী আহ্বানে সাড়া না দিলেও বন্ধের মধ্যে নতুন শিক্ষা বর্ষের ভর্তিতেই তারা মনোযোগী। কিন্তু অনলাইনে কিছু ক্লাস নিয়ে উচ্চ শিক্ষার বর্তমান সঙ্কটের সমাধান কি করা সম্ভব? বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, শিক্ষক, শিক্ষাবিদরা বলছেন, না। সঙ্কট সমাধানের জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তবে এই মুহূর্তে সকলেরই ভাবনায় শিক্ষার্থীদের জীবন।

কথা বলে জানা গেছে, করোনা সঙ্কটে বন্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেশি সঙ্কটে পড়বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সাত কলেজের দুই লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। এখনই বড় ধরনের সেশনজটে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ তাই সবচেয়ে বেশি। শিক্ষকরাও বলছেন, যদি এই অচলাবস্থা চলতে থাকে তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। কারণ তারা এমনিতেই দীর্ঘ সেশনজটে আছে। এভাবে চলতে থাকলে সেশনজট দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল উচ্চ শিক্ষার সঙ্কট ও তার উত্তরণ নিয়ে এখনই বেশি উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শই দিলেন। দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের অন্যতম এ বিশেষজ্ঞ বলছিলেন, হ্যাঁ বন্ধ যদি অনেক বেশি হয়। যদি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ হয় তাহলে সেশনজট কিছুটাতো হবে। তবে যদি দেড় দুই মাসের বন্ধ হয় তাহলে প্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষা ক্যালেন্ডার সমন্বয় করে বেশি বেশি ক্লাস ও বেশি সময়ে ক্লাস নিয়ে সমস্যা কাটানো সম্ভব হবে। আবার শুক্র ও শনিবারও তখন ক্লাস নেয়া যাবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা একটু এগিয়ে এনে হলেও সঙ্কটের অনেকটাই সমাধান করা যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ করোনার সঙ্কট না কাটলে প্রতিষ্ঠান কোনভাবেই খোলা যাবে না। সেক্ষেত্রে সেশনজটের সমস্যা কিছুতো আসবেই। কিন্তু এটাওতো মনে রাখতে হবে এ দুর্যোগ বিশ্বব্যাপী। যুক্তরাজ্যের মতো জায়গাতেও ডিসেম্বরের আগে বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে না। তাই আগে দেখা যাক কি অবস্থা দাঁড়ায়। এখন তো আর জিয়া, এরশাদের আমলের মতো মাসের পর মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে না। তখনতো চার পাঁচ মাসও বন্ধ থাকত। তাই আমার মনে হয়, আরও দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কট না হলে আমরা শীঘ্রই উচ্চ শিক্ষার সঙ্কট পুষিয়ে উঠতে পারব।

এদিকে সঙ্কট যে দিকে যাচ্ছে তাতে এখনই পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূন। তিনি বলছিলেন, মনে রাখতে হবে করোনাকালে যদি ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হয় তাহলে পাশে বসে আর কিছু করা যাবে না। এ অবস্থায় একটি জাতীয় শিক্ষা কমিটি করা উচিত। বর্তমান অবস্থা চালু থাকলে প্রাইমারী স্কুল খুলতেই পারবে না। তাই দুর্যোগকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবার যাতে কেউ আক্রান্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে কিভাবে চলতে পারি সেই পরামর্শ দেবে জাতীয় শিক্ষা কমিটি। এটাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে পরামর্শ। কারণ নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার না করলে দেশের দুই কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাবে। তবে যদি ভ্যাকসিন চলে আসে তাহলে জাতীয় শিক্ষা কমিটি লাগবে না।

দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের আশঙ্কা করে এখনই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. শেখ একরামুল কবীর। তিনি বলেন, আমাদের একটি বছর যে পিছিয়ে যাচ্ছে সেটি আগামী দুই বছরের মধ্যে যাতে সমন্বয় করা যায় সে ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যদি এখনই পরিকল্পনা গ্রহণ করা না যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে নানা সমস্যা তৈরি হবে। এছাড়া শিক্ষকদের জন্য একটা নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করতে হবে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043959617614746