গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপরে হামলার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তদন্ত কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আন্দোলনকারীরা। তদন্ত কমিটির তিনজন সদস্যই উপাচার্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। ‘উপাচার্যের নির্দেশে হওয়া হামলার তদন্ত তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা ঠিক কতটা সুষ্ঠুভাবে করবে?’ সে প্রশ্ন সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. অধ্যাপক নুরউদ্দিন আহমেদের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপরে হামলার তদন্ত করার জন্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. আব্দুর রহিম খানকে সভাপতি, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আরেফিন শামসুলকে সদস্য এবং আইন অনুষদের ডিন আব্দুল কুদ্দুস মিয়াকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত তদন্ত রিপোর্ট ও সুপারিশ রেজিস্ট্রেরের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে তদন্ত কমিটি গঠন নিয়ে শঙ্কিত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ‘ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করার পরেও কিভাবে অফিস আদেশ তৈরি হতে পারে এবং গতকাল (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে একটি বেসরকারি টিভিতে উপাচার্যের দেয়া বক্তব্য অনুসারে রেজিস্ট্রার ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থেকে কিভাবে অফিস আদেশ জারি করে তদন্ত কমিটি গঠন করলেন?’ প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জানান, উপাচার্য তাদের ন্যায্য ও অসহিংস আন্দোলন রুখতে নিজেই তার বাহিনী এবং বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপরে হামলা চালিয়েছেন। তার কাছ থেকে এই তদন্ত কমিটি গঠনের ঘটনা প্রহসন মাত্র।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত থেকে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের কারণে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও হল ত্যাগের ঘোষণা দেবার পরেও আন্দোলন অব্যাহত রাখে শিক্ষার্থীরা এবং হামলার শিকারে সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।