তরুণ প্রজন্ম পাশ্চাত্য দিবসের মারপ্যাঁচে - দৈনিকশিক্ষা

তরুণ প্রজন্ম পাশ্চাত্য দিবসের মারপ্যাঁচে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সারা বছর বিভিন্ন পাশ্চাত্য দিবসগুলোর আনাগোনা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসেই লক্ষ করা যায় তার পূর্ণ আধিপত্য। ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে যায় দিবস উত্সব অর্থাত্ ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ শুরু হয় গোলাপ ডে দিয়ে। এরপর যথাক্রমে— প্রপোজ ডে (প্রস্তাব দিবস), চকলেট ডে, কিস ডে (চুমু দিবস), হাগ ডে (আলিঙ্গন দিবস) এমনকি বিশ্ব আকর্ষণীয় দিবস তথা ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেনটাইনস ডে (ভালোবাসা দিবস) বিচরণ করে এ মাসেই এবং ফেব্রুয়ারি মাসের এ পাশ্চাত্য দিবসগুলোর মোটামুটি শেষ হয় ২১ তারিখ ব্রেক ডে দিয়ে। পক্ষান্তরে আমরা জানি যে, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং এ দিবস বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। যার ঘোষণার প্রস্তাব পাস হয় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেসকোর ৩০তম অধিবেশনে। যেহেতু এ দিবসের মহত্ত্ব গড়ে উঠেছে আমাদের বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করেই, সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশেও জাতীয়ভাবে বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে এ দিবস পালিত হয়। জাতীয়ভাবে এ দিবস পালিত হলেও বর্তমান তরুণ প্রজম্ম এ দিবসটাকে কিংবা এ ধরনের জাতীয় দিবসগুলোকে কতটুকু জানে কিংবা ধারণ করে তা আজ বড্ড পরিতাপের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ আমরা দেখি এ তরুণ প্রজম্ম দিবসপ্রেমী, যাবতীয় পাশ্চাত্য দিবসগুলো উদ্যাপনের অগ্রগামী ভূমিকা তারাই পালন করে। তারা দিবসপ্রেমী হওয়া সত্ত্বেও যখন তাদের প্রশ্ন করা হয় ২১ ফেব্রুয়ারি কী দিবস কিংবা এর মহত্ত্ব কী অথবা যদি জিজ্ঞেস করা হয় বাংলা কত সাল চলে কিংবা বাংলার মাসগুলো কী কী, এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে তারা রীতিমতো পৃষ্ঠদেশ প্রদর্শন করে। এ কি আমাদের জন্য অশনিসংকেত নয়? রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, ভাষাপ্রেমিক এবং ভাষা শহিদরা তাদের জীবন যে কারণে উত্সর্গ করেছিলেন, তার মর্যাদা কি আমরা রক্ষা করতে পেরেছি? ভাষার মাস এলেই দেখা যায় তথাকথিত সুশীলরা ঘুম থেকে ওঠেন এবং তারা ভাষার মর্যাদা রক্ষা নিয়ে বিভিন্ন টকশো, বক্তৃতায় কিংবা লেখায় যতসামান্য নীতিবাক্য জাতির উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করেন। ভাষার মাস এলেই তারা শুদ্ধ বাংলা ভাষার প্রতি অগাধ ভক্তি শ্রদ্ধার পুজো দেন। অথচ বাকি সময় আমাদের এ অবহেলিত ভাষা কয়েদখানায় গুমরে কাঁদে। কারণ, সুশীল থেকে অসুশীল—সবাই এখন আর বাংলা ভাষাকে সব জায়গায় প্রয়োজনবোধ করি না।

এমতাবস্থায় দেশের স্বার্থে ভাষার স্বার্থে এমনকি আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থে এ তরুণ প্রজম্মকে ভাষার মর্যাদা কিংবা মহত্ত্ব সম্পর্কে জাগিয়ে তোলা জরুরি এবং তা করতে হবে তাদের এ দিবস প্রেম মনোভাবের মধ্য থেকেই। তবে তা পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আগ্রাসানের বিপরীত উপায়ে এবং তাতে করেই এ তরুণ প্রজম্ম ভবিষ্যতে হয়ে উঠবে ভাষাপ্রেমিক ও সুস্থ দিবস চর্চাকারী। যাতে আমাদের ভাষার অমর্যাদা না হয় তাই সর্বপ্রথম আমাদের বুদ্ধিজীবীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এরপর সরকার এ নিয়ে যথাযথ উদ্বেগ গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদী। যেমনি করে বলা হয়—আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত্, তেমনি করে আমরা চাই সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এ তরুণ প্রজম্মকে সচেতন করে তোলা হোক। যাতে পরবর্তী প্রজম্মে আমাদের এ ভাষা কিংবা এ দিবস পাশ্চাত্য দিবসের জোয়ারে বারমুডা ট্রায়াংগেলে গিয়ে চির সমাহিত না হয়।

লেখক : হাওলাদার মুহা. হাসিব, শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042688846588135